নিজস্ব প্রতিবেদক | চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় মো. শাহ্ আলম (৪৫) নামে এক দোকান কর্মচারীকে কথা কাটাকাটির জেরে পিটিয়ে হত্যা করেছেন একই দোকানের আরেক কর্মচারী। অভিযুক্ত কর্মচারীকে এখনো পুলিশ গ্রেপ্তার করতে না পারলেও অভিযান অব্যাহত রেখেছেন তারা।
শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৬টায় পৌরসভার মিয়ারবাজার এলাকার মায়ের দোয়া ফুড প্রোডাক্ট নামে একটি বেকারিতে এ ঘটনা ঘটেছে।
নিহত শাহ্ আলমের বাড়ি সাতকানিয়া উপজেলার দক্ষিণ রূপকানিয়া এলাকার মাইজপাড়া এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ডে। তিনি চার কন্যা সন্তানের জনক।
অভিযুক্ত ওই দোকান কর্মচারী হলেন বাঁশখালী পৌরসভার ৫নম্বর ওয়ার্ডের ওসমান গনীর ছেলে মাহবুবুল আলম।
জানা গেছে, গত এক বছর যাবত মায়ের দোয়া ফুড প্রোডাক্ট নামের ওই বেকারিতে মালামাল সাপ্লাইয়ের কাজ করছিলেন নিহত শাহ্ আলম। একই বেকারিতে কাজ করেন অভিযুক্ত কর্মচারী মাহবুবুল আলম। গতকাল (বৃহস্পতিবার) মাহবুব ও শাহ্ আলমের মধ্যে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এরপর দোকান মালিক তাদের ডেকে মিমাংসাও করে দেন।
ওইদিনই ছুটি নেন মাহবুব। শুক্রবার ভোরে মাহবুব লোকজন নিয়ে এসে শাহ্ আলমের ওপর গাছের বাটাম দিয়ে হামলা চালান। এসময় ঘটনাস্থলেই জ্ঞান হারান শাহ্ আলম। পরবর্তীতে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত শাহ্ আলমের গ্রামের প্রতিবেশী মামুনুর রশীদ বলেন, ‘সকালে ঘুম থেকে উঠে আমার দোকানের দিকে যাওয়ার পর এলাকার এক প্রতিবেশী এনাম খবর আনে শাহ্ আলম বাঁশখালীর কর্মস্থলে এক্সিডেন্ট করেছে। তার দোকানের মালিক অভিভাবক নিয়ে যেতে বলেছে। আমি শাহ্ আলমের বড়ভাই জাহাঙ্গীরকে ফোন করি। সে শহরে (চট্টগ্রাম) থাকায় আমাকে যেতে বলে। দশ মিনিটের মাথায় এনাম আমাকে ফোনে বাঁশখালী থানার এক পুলি কর্মকর্তার সাথে কথা বলিয়ে দেয়। তিনি আমাকে জানান, শাহ্ আলম মারা গেছে।’
‘এরপর আমি আমাদের এলাকার ইউপি সদস্য নাছির সাহেবকে নিয়ে বাঁশখালী সদর হাসপাতালে যাই এবং শাহ্ আলমের লাশ দেখতে পাই। তাকে এমনভাবে মারা হয়েছে যে আমারই চিনতে কষ্ট হচ্ছিলো। এটি একটি পরিকল্পিত হত্যা। সেখানে থাকা থানার এক এএসআই হাসান হাবীব জানান, আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। প্রাথমিকভাবে তারা জানতে পেরেছে কাঠের বাটাম দিয়ে পিটিয়ে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এর সুষ্ঠ বিচার চাই।’ বলেন মামুনুর।
বাঁশখালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুধাংশু শেখর হালদার বলেন, ‘ঘটনাটি (শুক্রবার) ভোর ৫টা থেকে ৬টার মধ্যে ঘটেছে বলে আমরা ধারণা করছি। শাহ্ আলম বেকারির ভেতরে ঘুমাচ্ছিলো। ফজরের নামাজের সময় যখন বেকারির অন্যান্য কর্মচারীরা নামাজে যায় তখন মাহবুব এসে লাঠি দিয়ে শাহ্ আলমকে পেটায়। মূলত মাথার দিকটাতে তাকে আঘাত করা হয়। এরপর অন্যান্য কর্মচারীরা নামাজ শেষ করে তাকে অচেতন অবস্থায় দেখে সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।’
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত দোকান কর্মচারী মাহবুবকে গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।’
Print This Post