বখাটের ভয়ে স্কুলে যাওয়া বন্ধ ছাত্রী আলিমার!

আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০১৭ ২:২৬ অপরাহ্ন

dh
বগুড়া :: এবার জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী আলিমা খাতুন রেসনা। পরীক্ষায় ভালো করতে হবে। তাই নিয়মিত স্কুলে যায় সে। কিন্তু বাড়ি থেকে স্কুলের দূরত্ব কিলোমিটারখানেক। কখনও পায়ে হেঁটে আবার কখনও রিকশায় স্কুলে যাতায়াত করে আলিমা।

কিছু দিন আগে আলিমার স্কুলে যাওয়ার পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়ায় স্থানীয় দুই বখাটে রবিন ও শুভেচ্ছা। প্রেমের প্রস্তাব থেকে শুরু করে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয় তারা। আলিমা সেই কথা বাবা-মাকে জানায়। এতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে অভিভাবকরা। তারা দুই বখাটে এবং তাদের পরিবারের লোকদের প্রাথমিকভাবে সাবধান করে দেন। তাতেও থামে না দুই বখাটে। এতে বন্ধ হয়ে যায় আলিমার স্কুলে যাওয়া। আলিমা গত দেড় মাসে একদিনও স্কুলে যেতে পারেনি রবিন ও শুভেচ্ছার ভয়ে।

আলিমা বগুড়া শহরের উত্তর চেলোপাড়ার আকতার হোসেন লিটনের মেয়ে। সে স্থানীয় কার্টনার সেন্ট্রাল বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। দুই বখাটের বাড়িও উত্তর চেলোপাড়া। রবিন মেরাজের ছেলে আর শুভেচ্ছার বাবার নাম পাওয়া যায়নি। তার মায়ের নাম টুনটুনি বেগম বলে জানা গেছে।

আলিমার দাদা আফজাল হোসেন জানান, ওই দুই বখাটে সব সময় চাকু সাথে নিয়ে ঘোরে। তিনি জানান, নাতনিকে নিয়ে স্কুলে যাওয়ার পথে তারা তার সামনেও রিকশা থামিয়ে আলিমাকে নামিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছিল। উপায় না পেয়ে সোমবার আলিমার মা বগুড়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।

থানায় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন পর আলিমা গত ২৫ ফেব্রুয়ারি স্কুলে যায়। ওই দিন স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার সময় বিকাল ৪টায় ওই দুই বখাটে তার পথ আটকিয়ে আবারও প্রেমের প্রস্তাব দেয়। অশ্লীল কথাবার্তাও বলে তারা। কথা না শুনলে পকেট থেকে চাকু বের করে তাকে মেরে ফেলার ভয় দেখায়। ভয় দেখায় শরীরে এসিড নিক্ষেপেরও। সেই দিনের বিষয়টিও রবিন, শুভেচ্ছার বাবা-মাকে জানানো হয়। এতে তারা ছেলেকে না শাসিয়ে উল্টো অভিযোগকারীদের গালিগালাজ করেন বলে অভিযোগে বলা হয়।

আলিমার মা রহিমা বেগম বলেন, ‘মেয়েকে নিয়ে চরম উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছি। সামনে মেয়ের জেএসসি পরীক্ষা। এই সময় বখাটেদের ভয়ে স্কুল যেতে না পারায় পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। তিনি জানান, বিষয়টি থানায় অভিযোগের পাশাপাশি স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং স্থানীয় কাউন্সিলর কবিরাজ তরুণ কুমার চক্রবর্তীকে জানানো হয়েছে।

কার্টনার সেন্ট্রাল বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সদস্য ও স্থানীয় কাউন্সিলর কবিরাজ তরুণ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘দুই বখাটে রবিন এবং শুভেচ্ছার বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে ইভটিজিং, চুরি ছিনতাইসহ তিন চারটি মামলা রয়েছে। ওই দুইজনের ব্যাপারে স্থানীয় লোকদের সাথে কথা বলেছি। ওদের শাস্তির জন্য সব ধরনের আইনগত পদক্ষেপ চলছে।’

স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবদুল হামিদ বলেন, আলিমাকে ইভটিজিংয়ের বিষয়টি আমাদের কানে এসেছে। আমার আইনগত সার্বিক সহযোগিতা করে নির্বিঘ্নে স্কুলে যাওয়া-আসার বিষয়টি নিশ্চিত করতে কাজ শুরু করেছি।

সিটিজিসান.কম/রবি

Print This Post Print This Post