নিজস্ব প্রতিবেদক | এক মাসের মধ্যে চট্টগ্রাম অঞ্চলের সব অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা সহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও সতর্ক করে দিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
বুধবার (৬ মার্চ) প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ চট্টগ্রাম অঞ্চলে গ্যাস বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির আওতাধীন এলাকায় প্রিপেইড গ্যাস মিটারের ডেটা সেন্টার উদ্বোধন করতে গিয়ে এই নির্দেশ দেওয়া হয়।
প্রথম দফায় চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ, চান্দগাঁও, পাঁচলাইশ, চকবাজার, পাহাড়তলী, খুলশী, বাকলিয়া, সদরঘাট, কোতোয়ালী, হালিশহর, ডবলমুরিং, বন্দর, ইপিজেড, পতেঙ্গা, আকবরশাহ, লালদিঘী, কর্ণফুলী এবং চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী, পটিয়া, বোয়ালখালী, চন্দনাইশ, আনোয়ারা, সীতাকুণ্ড ও মিরসরাই এলাকায় সাত হাজার ৩৬৭টি প্রিপেইড গ্যাস মিটার স্থাপন করা হয়েছে।
ডেটা সেন্টার উদ্বোধনকালে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যেসব বিল্ডিংয়ে আপনারা অবৈধভাবে সংযোগ দিয়েছেন সেগুলো বিচ্ছিন্ন করতে হবে। প্ল্যান না দেখে কানেকশন দিয়েছেন—এরকম থাকতে পারবে না। আপনারা বেইলি রোডের মর্মান্তিক ঘটনা দেখেছেন। চট্টগ্রামে যেন সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়, আমরা সেটা চাই।’
নসরুল হামিদ বলেন, ‘কর্ণফুলীকে বলব, আগামী একমাসের মধ্যে আপনারা সব বিল্ডিংয়ে যাতায়াত করবেন। গ্রাহকদের সংশ্লিষ্ট অথরিটির অনুমোদন আছে কিনা, বিল্ডিংটা ডিজাইন অনুযায়ী আছে কিনা দেখবেন। ভবনের ডিজাইনে রেস্টুরেন্টের অনুমোদন থাকলে লাইন রাখবেন, না থাকলে লাইন কেটে দেবেন। আবাসিক বাড়ি বানিয়ে সেখানে হোটেল-রেস্টুরেন্ট করলে লাইন কেটে দেবেন। আবাসিক ভবনে ইন্ডাস্ট্রি চালু করলে, সেখানে গ্যাসের লাইন থাকবে না। আগামী এক মাস পরে আমি লোক পাঠাব, যদি আমি দেখি আপনারা গাফিলতি করেছেন তাহলে আপনাদের ব্যাপারে আমরা ব্যবস্থা নেব।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমি স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চাই, সরকার অনুমোদিত ও পরিকল্পিত শিল্প এলাকা ছাড়া কোথাও গ্যাসের কানেকশান হবে না। কোনো বিল্ডিংয়ে সরকারের অনুমোদন না থাকলে সেখানে গ্যাসের কানেকশান হবে না। কারখানা ও বাণিজ্যিক কোনো ভবনে গ্যাসের সংযোগ দিতে চট্টগ্রাম নগর কর্তৃপক্ষের অনুমোদন লাগবে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কর্ণফুলী বিতরণ এলাকায় এখন প্রিপেইড গ্যাস মিটার বসানো হচ্ছে। আমরা ধীরে ধীরে স্মার্ট প্রিপেইড মিটারের দিকে যাব, সেটার একটা প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এখন যে মিটারগুলো বসানো হচ্ছে এগুলো জাইকার সহযোগিতায় জাপানের তৈরি মিটার। আমাদের সহযোগী সংস্থাগুলো মিটারের ক্ষেত্রে আমাদের আর্থিক সহযোগিতা করার জন্য রাজি হয়েছে। আগামী তিন বছরের মধ্যে আবাসিক, বাণিজ্য, শিল্প সব গ্রাহককে আমরা প্রিপেইড স্মার্ট গ্যাস মিটারের আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা নিয়েছি।’
পুরনো সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পাশাপাশি নতুন সংযোগের ক্ষেত্রেও সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়ে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘সার কারখানা ও বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর কাছে আমাদের একটা বড় বকেয়া পড়ে গেছে। সেগুলো উদ্ধারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রিপেইড মিটার বসাতে পারলে আর বকেয়া হবে না। সারা বাংলাদেশে বিভিন্ন গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলোর প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকার মতো বিল বকেয়া পড়ে আছে। এই জায়গাটা আমরা কমাতে চেষ্টা করছি।’
Print This Post