ফের শাপলা চত্বরে তাণ্ডবের হুমকি হেফাজতের

আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৭ ৬:৫০ অপরাহ্ন

download-1

অনলাইন ডেস্ক :: সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে ভাস্কর্য না সরালে আবারও ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরের মতো ঘটনা ঘটানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে ধর্মভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামী। তাদের দাবি মানতে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন সংগঠনের নেতারা। বলেছেন, দাবি পূরণ না হলে পরিণতি ভালো হবে না।

শুক্রবার বাদ জুমা জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশে এই হুঁশিয়ারি দেন হেফাজতের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগরের নেতারা। তাদের দাবি, সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনে ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে যে ভাস্কর্যটি স্থাপন হয়েছে সেটি মূর্তি। আর ইসলামে মূর্তি স্থাপন নিষিদ্ধ।

বাংলাদেশে ইসলামী শাসন কায়েমের ১৩ দফা দাবি নিয়ে ২০১৩ সালের ৫ মে রাজধানী ঘেরাও করেছিল হেফাজত কর্মীরা। পরে সেদিন তারা শাপলা চত্বরে অবস্থান নেয়। সহিংস বিক্ষোভে দিনভর ব্যাপক হাঙ্গামা হয়। হামলা হয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে, সড়ক বিভাজকের গাছ কেটে আগুন ধরিয়ে দেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্রে তাণ্ডব তৈরি করে হেফাজত কর্মীরা। তাদের দাবি পূরণ না হলে শাপলা চত্বর না ছাড়ার ঘোষণাও দেয় তারা। পরে রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে পিছু হটে হেফাজত কর্মীরা।

ওই অভিযানের পর হাজার হাজার মানুষকে হত্যার গুজব ছড়ানো হয়। কিন্তু পরে কোনো নাম দিতে পারেনি হেফাজতে ইসলামী। বরং জীবিত কয়েকজনের নাম ছড়ানোর বিষয়টি প্রমাণ হয়। তবে হাজার হাজার মানুষ নিহতের প্রচারে সে সময় ভীষণ চাপে পড়ে আওয়ামী লীগ সরকার এবং দেশের পাঁচ মহানগরে নির্বাচনে বড় ব্যবধানে হেরে যায় সরকার সমর্থকরা।

প্রায় চার বছর পর এসে হেফাজত নেতারা আবারও একইভাবে শাপলা চত্বরের মতো ঘটনা ঘটানোর হুমকি দিয়েছেন। সংগঠনের সমাবেশে নায়েবে আমির (সহসভাপতি) নুর হোসেন কাসেমী বলেন, ‘৯০ ভাগ মুসলমানের দেশকে মূর্তির নগরী মেনে নেবে না তৌহিদী জনতা। আজ যারা ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলতে চায়, মূর্তি স্থাপন করতে চায়, তারা গাদ্দারি করছেন।’ তিনি বলেন, ‘গ্রিক দেবী থেমিসের মূর্তি ন্যায়বিচারের প্রতীক নয়। এটা কোনও মুসলমান মেনে নেবে না, মেনে নিতে পারে না।’

হেফজত নেতা বলেন, ‘অবিলম্বে ওই মূর্তি অপসারণ করুন, অন্যথায় আমাদের আমির যেকোনও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন এবং কোটি তৌহিদী জনতা সে কর্মসূচি সফল করবে।’

হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতা জুনায়েদ আল হাবিব বলেন, ‘২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে লাখ লাখ মানুষ এসেছিল। এবার মুর্তি সরানোর দাবিতে আহমদ শফীর আহ্বানে কোটি মানুষ একত্রিত হবে। ঢাকাকে অচল করে দেয়া হবে।’ তিনি বলেন, ‘আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ওই ‘গ্রিক মূর্তি’ অপসারণ করুন। না হলে কঠোর অবস্থানে যাবে হেফাজত।’

হেফাজতের ঢাকা মহানগরীর নায়েবে আমীর আহমাদ আব্দুল কাদের বলেন, ‘এ দেশকে মূর্তির রাষ্ট্রে পরিণত হতে দেয়া হবে না। ওই মূর্তি অপসারণ না হলে শাপলা চত্ত্বরের মত আবারও রাজপথ রক্তাক্ত হবে।’

সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি পল্টন মোড় হয়ে হাউস বিল্ডিং চত্বরে এসে শেষ হয়। বিক্ষোভ মিছিলে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন ছিল।

হেফাজতের ঢাকা মহানগরীর নায়েবে আমির মাহফুজুল হক, মজিবুর রহমান হামিদী, আব্দুর রব ইউসুফী প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

সিটিজিসান.কম/রবি

Print This Post Print This Post