চান্দগাঁওয়ে পূর্বশত্রুতার জেরে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে যখম

আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২২ ৯:১৭ অপরাহ্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২২ মঙ্গলবার : ৫.১০ পিএম

চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানা এলাকার একটি মোটরসাইকেল শোরুমের স্বত্বাধিকারী ব্যবসায়ী মো. কামাল উদ্দিন (৪২)। তার পুরাতন শোরুমটি ভেঙ্গে নতুন করে সংস্কার করার উদ্যোগ নেন তিনি। কিন্তু তাতে বাধ সাধে স্থানীয় কয়েকজন যুবক। শোরুম সংস্কার করলে চাঁদা দিতে হবে তাদের। তাদের কথা মতো টাকা দিতে না চাওয়ায় পরবর্তীতে দোকান সংস্কারের জন্য নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহ করারও প্রস্তাব দেন ভূক্তভোগী কামালকে। পরে সেই প্রস্তাবেও রাজি না হলে দুই মাস ধরে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছিল তারা।

সম্প্রতি ভূক্তভোগী কামাল উদ্দিন তার প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হলে রাস্তার গলিতে গতিরোধ করে ৪ থেকে ৫ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাকে কুপিয়ে রক্তাক্ত করে পালিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান স্থানীয়রা। এ ঘটনায় চক্রটির বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়।

গত ২০ ডিসেম্বর পাঁচজনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন ভূক্তভোগীর ছোট ভাই মো. ওসমান গণি মানিক।

এর আগে, গত ১৮ ডিসেম্বর বিকেলে আনুমানিক সাড়ে ৫টার দিকে চান্দগাঁও থানার বসুন্ধারা ক্লাবের পাশের গলিতে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

মামলার অভিযুক্তরা হলেন—চান্দগাঁও থানার ৬ নম্বর ষোলশহর ওয়ার্ডের ইয়াছিন হাজীর বাড়ীর হাজী সুলতান আলমের পুত্র ওয়াহিদুল আলম জিতু (২৮), একই এলাকার মো. বশরের দুই পুত্র মো. রাসেল (৩৩) ও মো. টিপু (৩০), একই এলাকার মাওলানা ইউসুফের পুত্র মো. সাজ্জাদ (৩২) এবং একই এলাকার হাজী ইদ্রিস আলমের পুত্র তৌহিদুল আলম রাজু (৩৩)।

এজাহারের বিবরণ থেকে জানা যায়, চান্দগাঁও থানার পূর্ব ষোল শহর ওয়ার্ডের ইয়াসিন হাজীর বাড়ীর মৃত আব্দুল ওহাবের পুত্র মো. কামাল উদ্দিন। ওই থানার মোড়ে বসুন্ধারা ক্লাবের দক্ষিণ পাশে শাহ আমানত মোটরসের স্বত্বাধিকারী হন কামাল। সম্প্রতি তার দোকানের দেওয়াল ভেঙ্গে গেলে সেটি মেরামত করতে গেলে পূর্বশত্রুতার জের ধরে বাধা দেয় আসামিরা। পরবর্তীতে দোকান সংস্কার করতে নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহ করার প্রস্তাবনা দেন আসামিরা। সেটিও রাজি না হওয়ায় তাকে গত ১৮ ডিসেম্বর বিকেলে ৪/৫ জনের একটি দল হত্যার উদ্দেশ্যে উপর্যপুরি হামলা করে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে ভূক্তভোগী কামাল উদ্দিনকে। এসময় তার প্যান্টের পকেটে থাকা ২০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের নিউরোসার্জারি বিভাগে ভর্তি করানো হয়। সেখানে তার চিকিৎসা দেওয়া হয়।

মামলার বাদী মো. ওসমান গণি মানিক বলেন, ‘আমার বড় ভাই একজন ব্যবসায়ী। তার একটি পুরাতন মোটরসাইকেল বেচা-কেনা করার শোরুম রয়েছে। সম্প্রতি তার শোরুমটি সংস্কার করতে গেলে স্থানীয় একটি চক্রটি চাঁদা দাবি করে। পরে চাঁদা না দিলে দোকান নির্মাণের সামগ্রী সাপ্লাই করারও প্রস্তাব দেয় আমার ভাইকে। তাদের সেই প্রস্তাবও প্রত্যাখ্যান করা হয়। এ ঘটনার জের ধরে আমার ভাইকে তারা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে মামলাটি নামিয়ে ফেলার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছে চক্রটি। মামলা না নামালে আমাকে ও আমার ভাইকে বিভিন্ন ধরনের অজ্ঞাত মামলায় জড়িয়ে দেয়ারও হুমকি দেয়।’

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চান্দগাঁও থানার পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আব্দুল মোনাফ। তিনি বলেন, ‘পলাতক পাঁচ আসামিকে আমরা খুঁজছি। মামলাটি নিয়ে কাজ চলছে। আসামিদের গ্রেফতারে আমাদের অভিযান অব্যহত আছে।’

সিএস/আরইআর

Print This Post Print This Post