
নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট : ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১ রবিবার ০৯:৫০ পিএম
মো. আজিম হোসেন প্রকাশ ইমন (২৭), মো. আরিফ হোসেন (৩০) ও মো. তারেক (২২)। তারা কখনো রিকশাচালক আবার কখনো দিনমজুর হিসেবে কাজ করে। বিভিন্ন সময়ে সেবাপ্রার্থী সেজে বিভিন্ন থানায় গিয়ে থানার ওসি, তদন্ত ও অফিসারদের নাম সংগ্রহ করে থানায় সংঘটিত বিভিন্ন ঘটনা সম্পর্কে খোঁজখবর নেয়। তাৎক্ষণিক উক্ত ঘটনার দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারের নাম ব্যবহার করে আসল বাদী, বিবাদীর কাছ থেকে দাবি করেন চাঁদা। আবার কখনো থানার ওসি পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করে। এবার আসাদগঞ্জের এক ব্যবসায়ীর কাছে ওসি পরিচয়ে চাঁদা দাবি করে পুলিশের কব্জায় এই তিন প্রতারক।
রবিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সিটিজিসানকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দীন।
পুলিশ জানায়, আসাদগঞ্জের ব্যবসায়ী মো. লুৎফর রহমানের কাছে কল করে কোতোয়ালী থানার ওসি বলে পরিচয় দেয় মো. আজিম হোসেন প্রকাশ ইমন। ব্যবসায়ীকে কারখানা চালানোর বিষয়ে আয়কর না দেওয়াসহ বিভিন্ন ভাবে হুমকি দেয়। আয়করের টাকা বাবদ এবং কোতোয়ালী থানা এলাকায় ব্যবসা পরিচালনা করতে চাইলে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। অন্যথায় ব্যবসা বাণিজ্য করতে দেবে না বলে হুমকি দেন। মো. আজিম হোসেন প্রকাশ ইমন ২ ঘণ্টা পর তার কাছ থেকে পুনরায় ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।
তিনি টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ব্যবসায়ী মো. লুৎফর রহমানকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। একটি নগদ নম্বরে টাকা পাঠানোর কথা বলে অন্যথায় জানে মেরে ফেলার হুমকি দেন। মো. আরিফ হোসেনের নগদ নম্বরে ১ হাজার ৫০০ টাকা বিকাশে পাঠান। গত ১৬ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টার দিকে মো. আজিম হোসেন প্রকাশ ইমন পুনরায় নগদে টাকা পাঠাতে বললে তিনি বিষয়টি টহল পুলিশকে অবহিত করেন।
কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন বলেন, ‘তারা কখনো রিকশা চালক, কখনো দিনমজুর হিসেবে কাজ করে। সেবাপ্রার্থী সেজে বিভিন্ন থানায় গিয়ে থানার ওসি, তদন্ত ও অফিসারদের নাম সংগ্রহ করতো তারা। নাম সংগ্রহ করার পর খোঁজখবর করতো থানায় সংঘটিত বিভিন্ন ঘটনা সম্পর্কে। পরে দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারের নাম ব্যবহার করে আসল বাদী, বিবাদীর কাছ থেকে চাঁদা দাবি করত চক্রটি। নিজেদের থানার ওসি পরিচয় দিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছেও চাঁদা চাইতো তারা। পরবর্তীতে ওসব টাকা তারা ভাগ করে নেয়। সাম্প্রতিক সময়ে তারা সমীর চৌধুরী নামক এক ব্যক্তিকে ভুয়া একটি মামলার রেফারেন্স দিয়ে থানায় কোতোয়ালী থানায় আসতে বলে ও ৫ হাজার টাকা খরচও পাঠাতে বলে।’
ওসি বলেন, ‘পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা পরস্পর যোগসাজশে কোতোয়ালী থানার ওসি পরিচয়ে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবির কথা স্বীকার করে। ইতিপূর্বেও বিভিন্ন মোবাইল নম্বরের ব্যক্তিদের কাছ থেকে কোতোয়ালী থানা, পাঁচলাইশ থানা, পতেঙ্গা থানার এসআই/মিজান পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ভয়ভীতি প্রদর্শন করে চাঁদা দাবি করেছে তারা। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে বলেও জানান ওসি।’
আরএইচ/সিএস
