হ্লাসিং থোয়াই মার্মা, বান্দরবান
শীতের তীব্রতা জেঁকে বসেছে পার্বত্য জেলা বান্দরবানে। বৃহস্পতিবার সকাল নয়টার মধ্যে সূর্যের দেখা মিললেও কমছেনা শীতের প্রচন্ড প্রকোপ। তীব্র শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। এতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন মাধারণ ও নিম্ন আয়ের মানুষ।
এদিকে, তীব্র শীতের কারণে বিভিন্ন মার্কেট ও ফুটপাতের গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে কাপড় কিনতে ভীড় করছেন মানুষজন। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দরিদ্র অসহায়দের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরণ করা হলেও এখন পর্যন্ত কোন সামাজিক সংগঠন, সরকারি-বেসরকারি সংস্থার পক্ষ থেকে শীত বস্ত্র বিতরণে এগিয়ে আসেনি কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক সংগঠনগুলো।
তবে গতকাল রাতে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী ও সপ্তমবারের মত নির্বাচিত স্থানীয় সংসদ সদস্য বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপির সহধর্মিনী মেহ্লাপ্রু মার্মাকে শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করতে দেখা গেছে।
অন্যদিকে, তীব্র শীতের কারণে ঘর থেকে বের হতে পারছেনা মানুষ। এতে সবচেযে বেশি বিপাকে পড়েছেন দিনমজুর, রিক্সা চলকসহ নিম্ন আয়ের মানুষেরা।
জেলা আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, গতকাল থেকে এ জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে ৯.৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস। আরও কয়েকদিন থাকতে পারে শীতের তীব্র প্রকোপ।
জানা গেছে, তীব্র শীতের কারণে ঠান্ডা জনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে অনেকে। বিশেষ করে স্কুল পড়ুয়া কোমলমতি শিক্ষার্থীরাই পড়েছে বিপাকে। তীব্র শীতের কারণে স্কুল বন্ধ করার কথা থাকলেও বান্দরবানে এখনও কোনো বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়নি। যার ফলে সন্তানদের নিয়ে বিপাকে পড়েছেন অভিভাবকরা।
উজানী পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণি শিক্ষার্থী মাচোমে এর মা ডসিং ম্যা মার্মা বলেন, কনকনে শীতের মধ্যেও বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাতে হচ্ছে। কযেকদিন স্কুল বন্ধ রাখলে ভালো হতো।
রিক্সা চালক কোরবান আলী জানান, ‘রিক্সার চাকা না ঘুরলে আমাদের সংসারের চাকাও ঘুরেনা। তাই পেটের দায়ে আমাদেরকে এ তীব্র শীত উপেক্ষা করে প্রতিদিন বের হতে হয়।’
এদিকে সবচেয়ে বিপাকে আছে দুর্গম এলাকার মানুষেরাও। খড় ও কাঠ পুড়িয়ে শীত নিবারণ করছেন তারা। এসব মানুষজন অর্থের অভাবে অনেকেই শহরের আসতে পারেনা। শীতবস্ত্র বিতরণে সরকারী সহযোগিতা না পাওয়ার অভিযোগ করেন নিম্ন আয়ের সাধারণ এসব মানুষ।
আরও কয়েকদিন এই তীব্র শীত অব্যাহত থাকবে জানিয়ে বান্দরবান আবহাওয়া অধিদপ্তরের অফিসার ইনচার্জ সনাতন কুমার মন্ডল বলেন, ‘রেকর্ড পরিমাণ তাপমাত্রা এই বছর বান্দরবানে ৯.৪ ডিগ্রী সেলসিয়াসে নেমে এসেছে। তীব্র ঠান্ডার পাশাপাশি হালকা বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে বলে জানান আবহাওয়া অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা।’
বান্দরবান জেলার সিভিল সার্জন মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘ঠান্ডার কারণে রোগীর সংখ্যা না বাড়লেও কিছু সংখ্যক রোগী ঠান্ডার লক্ষণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।’
সিএস
Print This Post