বাদী অস্ট্রেলিয়া, চট্টগ্রামে মামলার শুনানি হলো ভিডিও কলে

আপডেট: ১ নভেম্বর ২০২৩ ১০:৪১ অপরাহ্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক | সুদূর অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী আবদুল আমিন। ২০২০ সালের চট্টগ্রামের একটি সিআর মামলার বাদী তিনি। এদিকে দীর্ঘদিন যাবৎ তিনি ভুগছেন হৃদরোগে। সম্প্রতি তাঁর অসুখ বেড়ে যাওয়ায় ডাক্তার তাঁকে ভ্রমণ করতে নিষেধ করেন। কিন্তু এরইমধ্যে মামলার হাজিরার তারিখ থাকায় উচ্চ আদালতে ‘প্র্যাকটিস নির্দেশনা’ অনুযায়ী মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে ভিডিও কলে। যা চট্টগ্রামেই প্রথম।

গত মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) চট্টগ্রাম দ্বিতীয় আদালতের মহানগর হাকিম (সিএমএম) মো. অলি উল্লাহ এ শুনানি রেকর্ড করেন।

এর আগে, চলতি বছরের ২০ আগস্ট আদালত কর্তৃক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার আইন, ২০২০ এর ৫ ধারার ক্ষমতাবলে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী আদালত কক্ষ হতে কোন স্থানে অবস্থানরত মামলার কোন পক্ষ, সাক্ষী, অভিযুক্ত ব্যক্তি, আইনজীবী, বিশেষজ্ঞ এবং মামলার সংশ্লিষ্ট কোন ব্যক্তির তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে অডিও-ভিজুয়ালের মাধ্যমে মামলায় উপস্থিতি, সাক্ষ্যগ্রহণ ও শুনানিসহ সকল বিচারিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণের ‘প্র্যাকটিস নির্দেশনা’ জারি করেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, আবদুল আমিন অস্ট্রেলিয়ায় ব্যবসা করেন এবং প্রায়ই তিনি বাংলাদেশে আসা-যাওয়া করেন। সরওয়ার জামাল নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ১৫ লাখ টাকা চেক প্রতারণার অভিযোগে ২০২০ সালে তিনি আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ হৃদরোগে ভুগছিলেন এবং সম্প্রতি অসুখ বেড়ে গেলে তিনি ডাক্তারের শরণাপন্ন হন। চিকিৎসক তাঁর শরীরের অবস্থা বিবেচনায় দূরবর্তী ভ্রমণ করতে নিষেধ করেন।

এরমধ্যে তাঁর মামলার হাজিরার তারিখ থাকায় আবদুল মোমেনের আইনজীবী ভিডিও কলে হাজিরা রেকর্ডের জন্য গত ২০ আগস্টের ‘প্র্যাকটিস নির্দেশনা’ অনুযায়ী আদালতে আবেদন জানান। আদালত মঞ্জুর করলে গতকাল (মঙ্গলবার) জুম অ্যাপের মাধ্যমে আদালত কর্তৃক নির্ধারিত ব্যক্তি এবং অস্ট্রেলিয়ায় থাকা বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে হাজিরা রেকর্ড করা হয়।

চট্টগ্রাম মহানগর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) মোমেনুর রহমান  বলেন, ‘তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার আইন ২০২০ এর ৫ ধারামতে বাংলাদেশের মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের গর ২০ আগস্টের ‘প্র্যাকটিস নির্দেশনা’র আলোকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন দ্বিতীয় আদালতে প্রথমবারের মতো সি.আর মামলায় বাদীপক্ষের বিজ্ঞ আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বাদী সুদূর অস্ট্রেলিয়া থেকে ভিডিও কনফারেন্সে শুনানিতে অংশগ্রহণ করেন। এর আগে বাদীর আইনজীবী ভিডিও কলে হাজিরার অনুমতি চেয়ে আদালতে আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।’

মামলার সর্বশেষ অগ্রগ্রতির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মামলা দায়েরের পর থেকেই আসামি পলাতক আছে। পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। মামলাটি এখন বিচারের জন্য প্রস্তত। এটি পরবর্তীতে দায়রা জজ আদালতে বদলি করা হবে।’

আইনজীবী মোমেনুর রহমান বলেন, ‘ন্যায় বিচার প্রতিষ্টার লক্ষ্যে বিচারপ্রার্থীকে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হওয়ার সুবিধা প্রদান করায় সরকারের গৃহীত এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।’

সিএস

Print This Post Print This Post