কাজীর দেউড়ি শিশুপার্ক সিলগালা করলো প্রশাসন

আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০২৩ ৪:১২ অপরাহ্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেটঃ ২৩ অক্টোবর, ২০২৩ সোমবার ০৪.১০ পিএম

চট্টগ্রামের কাজীর দেউড়ি এলাকায় ৩ একর জায়গাজুড়ে গড়ে উঠেছে শিশুপার্ক। যেটি নগরবাসী ‘কাজীর দেউড়ি শিশুপার্ক’ হিসেবেই চেনে। শিশুপার্কের জায়গাটি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে (চসিক) ব্যবস্থাপনার জন্য দেয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। আর সেই জায়গা নামমাত্র মূল্যে ২৫ বছরের জন্য ইজারা দেয় চসিক। সেই চুক্তির মেয়াদ শেষে আবারও ১৫ বছরের ইজারা দেয়া হয় নামমাত্র মূল্যেই। এবার চসিক শর্ত ভঙ্গ করায় সেই শিশুপার্ক সিলগালা করে দিয়েছে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এরপর সেটি বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন চট্টগ্রাম সেনানিবাসের এস্টেট শাখাকে।

সোমবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে চলা এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নু এমং মারমা মং ও রাকিবুল ইসলাম।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে ব্যবস্থাপনার জন্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জায়গাটি দেওয়া হয়েছিলো। এরপর ১৯৯৪ সালের ২৮শে নভেম্বর ঢাকার প্রতিষ্ঠান ‘ভায়া মিডিয়া বিজনেস সার্ভিসেস’ এর কাছে ৩ একরের এই জায়গাটি ইজারা দেয় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। যেখানে গড়ে তোলা হয় কাজীর দেউড়ি শিশুপার্ক। এরপর ইজারার মেয়াদ শেষে ২০১৯ সালের ২৮ নভেম্বর মাসিক মাত্র দেড় লাখ টাকা ভাড়া হিসেবে ১৫ বছরের জন্য পুনরায় জায়গাটি ‘ভায়া মিডিয়া বিজনেস সার্ভিসেস’ প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেয় চসিক।

এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নু এমং মারমা বলেন, ‘এই শিশুপার্কের জায়গাটি মূলত প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের জায়গা। আর এই জায়গা বুঝে নেওয়ার জন্য আজ চট্টগ্রাম সেনানিবাসের এক্সিকিউটিভ অফিসার এসেছেন। তাকে সহায়তা করার জন্য আমরা জেলা প্রশাসনের দুইজন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এখানে এসেছি। এরপর জমিটির দখল ওনাদেরকে বুঝিয়ে দিয়েছি।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় যে শর্তে এটি সিটি করপোরেশনকে ব্যবহার করতে দিয়েছিলো সেটি ভঙ্গ করার কারণে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষে সামরিক ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা দখল বুঝে নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক মহোদয়কে অনুরোধ করে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রেখে জমিটির দখল বুঝিয়ে দেওয়ার কারণেই আমরা এসেছি এবং সিলগালা করে স্থাপনাটি বুঝিয়ে দিয়েছি।’

চট্টগ্রাম সেনানিবাসের ক্যান্টনমেন্ট এক্সিউকিউটিভ অফিসার সাজিয়া তাহের বলেন, ‘এই জায়গাটি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সিটি করপোরেশনকে ব্যবস্থাপনার জন্য দিয়েছিলো। সিটি করপোরেশন শর্ত ভঙ্গ করে এই জায়গাটি ইজারা দিয়েছেন। এরই প্রেক্ষিতে আজ জেলা প্রশাসনের সহায়তায় জায়গাটি দখলমুক্ত করে এমই (মিলিটারি এস্টেট) অফিসকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

উল্লেখ্য, জায়গাটি পুনরায় ইজারা দেওয়ায় চট্টগ্রামের বিভিন্ন মহল থেকে বাণিজ্যিক শিশুপার্কটি বন্ধ করে সেখানে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ এবং সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত সবুজ চত্বর তৈরির দাবি উঠেছিল। সেই দাবিতে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রামের বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের ব্যক্তিরাও।

আরআর/সিএস

Print This Post Print This Post