নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট : ১৫ জানুয়ারি, ২০২৩ রবিবার : ১০:৫০ এএম
সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার প্রায় এক হাজার শিক্ষকের নাস্তা ও শিক্ষা উপকরণের বরাদ্দের টাকা আত্মসাত করার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আজিম শরীফের বিরুদ্ধে।এমন অভিযোগ করেছেন সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলার ৬৭৯ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা।
জানা যায়, সাতকানিয়ার ৫৪৬ জন এবং লোহাগাড়া উপজেলার ১৩৩ জন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে নতুন মাধ্যমিক কারিকুলাম শিক্ষা পাঠদানের প্রশিক্ষণ দেওয়ার দায়িত্ব পেয়েছেন সাতকানিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আজিম শরীফ। সাতকানিয়ার মডেল হাইস্কুলে এ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলমান আছে। প্রশিক্ষক এবং প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য সরকারি ভাবে নাস্তার বিল এসেছে দৈনিক ৮০টাকা এবং প্রশিক্ষণ চলবে মোট ৫দিন। এই ৫দিনের খাতা কলমের খরচ বাবদ ১০০টাকা, গাড়ী ভাড়া দৈনিক ২৫০টাকা, দুপুরের খাবার বাবদ দৈনিক ৩০০টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
শনিবার (১৪ই জানুয়ারি) স্কুলে সরেজমিনে দেখা গেছে, খাতা-কলম বাবদ একটি ২৫টাকার প্লাষ্টিকের ফাইল, একটি ৫টাকা দামের কলম ও একটি ১০টাকা দামের খাতা বাবদ মোট ১০০টাকা। সেখান থেকে ব্যয় করা হয়েছে ৫দিনের জন্য ৪০টাকা। অপরদিকে দৈনিক নাস্তার বিল বাবদ দৈনিক ৮০টাকা থেকে ব্যয় করা হয়েছে ৪০ টাকা।
সকাল বেলার ১টি সাগরকলা ১টি ডিম, ১টি সমুছা,১কাপ রং চা, ২৫০গ্রামের একটি ৮ টাকা দামের পানির বোতল, দুপুরের খাবারের পর একটি ৪টাকা দামের লেক্সাস বিস্কুট ও রং চা সবমিলিয়ে নাস্তার বিল জনপ্রতি জন্য ব্যয় করা হচ্ছে ৪০টাকা।
দুপুরের খাবার বাবদ টিএডিএ নগদ পেমেন্ট করা হবে বলে জানান সাতকানিয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার আজিম শরীফ।
এদিকে আজিম শরীফ শিক্ষকদের নাস্তা থেকে দৈনিক আত্মসাত করছেন ২৭ হাজার ১৬০টাকা। আর শিক্ষকদের জন্য বরাদ্দকৃত ১০০ টাকা থেকে কৌশলে দৈনিক আত্মসাত করে যাচ্ছে ৪০ হাজার ৭৪০টাকা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রশিক্ষণ নিতে আসা শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকা প্রতিবেদককে সাতকানিয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার আজিম শরীফের এই দূর্নীতির কথা তোলে ধরেন।
মীর্জাখীল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুমন বড়ুয়া হলেন খাবার বিতরণ কমিটির আহ্বায়ক। তিনি খাবারের হিসাব দিতে গিয়ে পাইকারী ৪টাকা দামের লেক্সাস বিস্কুট ১০টাকা দাম বলে হিসাব বাড়াতে থাকলেও মোট ৮০টাকা হচ্ছে না।
প্রসঙ্গে আজিম শরীফ বলেন, সাড়ে ১০ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে। এখানে দূর্নীতির কিছু নেই। আমরা চন্দনাইশ উপজেলা থেকে ভালো আছি ওরা দিছে শুধু জিলাপি। আমরা ডিমও দিলাম। খাতা-কলমের বিষয়েও দূর্নীতি হয়েছে—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ভ্যাট বাদ দিয়ে হিসাব করেন। কোন টাকা অবশিষ্ট থাকবে না।’
খাবার কমিটির আহ্বায়ক সুমন বড়ুয়া বলেন, ‘ডিম প্রায় ১৮টাকা পড়েছে। একটা বাজার থেকে অফিস পর্যন্ত আসতে। আমি মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আজিম শরীফের নির্দেশেই কাজ করে যাচ্ছি। আপনি কোথাও আমার নাম দিয়েন না।’
এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার ফরিদুল আলম বলেন, ‘আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। অনিয়ম পেলে ব্যবস্থা নেব।’
সিটিজিসান/এমবিইউ
Print This Post