
নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট : ২২ অক্টোবর, ২০২২ শনিবার : ৫.৪০ পিএম
বাঁশখালীর সরল সাগরপাড়ের চিংড়ি ঘেঁর থেকে রাতের আঁধারে মাছ লুট করার অভিযোগ উঠেছে। এসময় সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে চিংড়ি ঘেঁরের নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের মারধর করে।
শুক্রবার (২১ অক্টোবর) রাত ১১টা ৩০ মিনিটের দিকে সরল ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর মিনজীরিতলা গ্রামের সাগরপাড়ে লবণ মাঠে এ ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য চাষী তৈয়ব উল্লাহ বাঁশখালী থানায় অভিযোগ করেছেন। এদিকে অভিযোগ পেয়ে শুক্রবার (২১ অক্টোবর) রাতে বাঁশখালী থানার ওসি (তদন্ত) আরিফুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সরজমিনে গেলে পুলিশের ওপরও গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে পুলিশকে লক্ষ্য করে ২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে সন্ত্রাসীরা। তবে পুলিশ বিষয়টি অস্বীকার করছে।
মাছ লুটের ঘটনায় অন্তত ৫-৬ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি করেছে বলে জানান চাষী মো. তৈয়ব উল্লাহ। ভুক্তভোগী চাষী তৈয়ব সরল ইউনিয়নের উত্তর মিনজীরিতলা এলাকার হাজী এজাহার মিয়ার পুত্র।
এ বিষয়ে তৈয়ব বাদী হয়ে সরল নোয়াপাড়া এলাকার সালাউদ্দিন কাদের মানিক (৪০), আজম উদ্দিন (২৪), মো. মিয়া (২২), মো. নেছার আহমেদ (৫৫), মঈনুদ্দিন (৪০), মোস্তাফিজ (৪০), হামিদুল্লাহ (৩৫), মো. রহিম (২৫), আব্দুল মান্নান রানা (৩২), আলমগীর (৩০), মো. আবু (৪০), মো. তৌহিদ (৩২) এবং মো. মনুর (৩৩) বিরুদ্ধে বাঁশখালী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) রাতের আঁধারে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সরল ইউনিয়নের নোয়াপাড়া এলাকার স্থানীয় প্রভাবশালী জমির উদ্দিনের ছেলে মো. সালাউদ্দিন কাদের মানিকের নেতৃত্বে ৬০ থেকে ৭০ জনের একদল সন্ত্রাসী উত্তর মিনজীরিতলা এলাকার মো. তৈয়ব উল্লাহ সওদাগরের চিংড়ি প্রজেক্টের বাঁধ কেটে প্রথমে পানি ছেড়ে দেয়। পরে ওই প্রজেক্ট থেকে অন্তত ৫-৬ লক্ষাধিক টাকার মাছ লুট করে নিয়ে যায়। এর আগে ১৬ অক্টোবর আঁধার রাতেও একই ঘটনা ঘটায় জড়িতরা।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী তৈয়ব উল্লাহ বলেন, ‘সরল ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আমিনুর রশীদের ছেলেদের কাছ থেকে বাৎসরিক লাগিয়ত হিসেবে মৎস্য প্রজেক্ট ও লবণ মাঠ করার জন্য নিয়েছি। লাগিয়ত হিসেবে নিয়ে চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের ঘোনা করেছি। ওই মাছের ঘোনা থেকে অভিযুক্ত সালাউদ্দিন মানিক দলবল নিয়ে অন্তত ৫-৬ লাখ টাকার মাছ লুট করে নিয়ে যায়। প্রজেক্ট থাকা আরো প্রায় ৬০ হাজার টাকার মাছ ধরার জালও নিয়ে গেছে। সালাউদ্দিন মানিক একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যু প্রকৃতির লোক। তার বিরুদ্ধে অন্তত ১০টি মামলা রয়েছে। পুলিশ তদন্ত করতে গেলে তার নেতৃত্বে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে।’
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সালাউদ্দিন কাদের মানিক বলেন, ‘অভিযোগ দিয়েছে; কিন্তু ওখানে রাত্রে পুলিশ গিয়ে তদন্ত করার দরকার কি? গতরাত ২টায় পুলিশ সেখানে গিয়ে তদন্ত করলে পুলিশকে লক্ষ্য করে কে বা কারা গুলি ছুড়ছে। দিনে গেলে তো কে কাকে গুলি করতেছে; সেটা ভালো করে বুঝা যেতো। এটা আমার শত্রুপক্ষের লোকজন নাটক সাজাতে চাচ্ছে।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাঁশখালী থানার ওসি (তদন্ত) আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘সরেজমিনে তদন্ত করতে গিয়েছিলাম। ওনার ওখানে সমস্যা হয়েছিল। দুই রাউন্ড গুলি করছে কিনা; এটা শিউর না। ওখানে কিছু লোক পাইছিলাম, লোকগুলো কারা সেটা চিহ্নিত করতে পারিনি। ঘটনার বিষয়ে আরও ব্যাপক তদন্তের প্রয়োজন আছে।’
প্রসঙ্গত, গত ৫ জুলাই ভুক্তভোগী মাছ চাষী তৈয়ব উল্লাহর চিংড়ি ঘেঁরে মাছ লুটের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ৫ জুলাই সালাউদ্দিন কাদের মানিক সহ ৬ জনের বিরুদ্ধে বাঁশখালী থানায় মামলা দায়ের করেন তৈয়ব উল্লাহ।
সিটিজিসান/এমবিইউ
