
নিজস্ব প্রতিবেদক| আপডেট : ১৩ জুলাই, ২০২২ বুধবার : ১০. ২০ এএম
তজু, হারুন, ফারুক। তিনজনের বাড়ি চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার মেরিন একাডেমি এলাকায়। তাদের নেতৃত্বে রয়েছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। কোস্টগার্ডের সোর্স পরিচয়ে কর্ণফুলী নদী ও সাগরে বিভিন্ন ধরনের অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছেন তারা। এমনকি একটি চুরির মামলার অভিযোগে তিনজনের নাম পাওয়ার তথ্য জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কর্ণফুলী মেরিন একাডেমি জেটির সংলগ্ন বন্দর ফাঁড়ি এলাকায় তারা চোরাইপথে মালামাল কিনে গোডাউনে গোদামজাত করছে। এসব মালামালের প্রকৃতপক্ষে কোনো ধরনের প্রমাণস্বরুপ কাগজপত্রাদি নেই। সরকারি কর ও ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে কেনা ডিজেল, জাহাজের স্ক্র্যাপ সহ বিভিন্ন ধরনের মালামাল গুদামজাত করছে প্রকাশ্যে। নিয়মনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে দাহ্য পদার্থ রাখলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো নজর নেই। এভাবে দাহ্য পদার্থ রাখার ফলে যে গোডাউনে অগ্নিকান্ডের মতো দুর্ঘটনা ঘটনার আশংকা করেছেন স্থানীয়রা।
অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় কতিপয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যেদের মাসোহারা দিয়ে প্রকাশ্যে চলছে এসব অবৈধ ব্যবসা। দীর্ঘদিন ধরে এই ব্যবসা চলে আসলেও গ্রেপ্তার এড়াতে নিজেদের একটি সংস্থার সোর্স বলে দাবি করেন তারা। নানা অপকৌশল করে দীর্ঘদিন ধরে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে এ তিনজনের সিন্ডিকেট।
পুলিশ জানায়, মাস দুয়েক আগে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) পতেঙ্গা থানায় একটি জাহাজের যন্ত্রাংশের চুরি মামলায় তদন্ত করতে গিয়ে অভিযোগে নাম পাওয়া গেছে তজু, হারুন ও ফারুকের। ওই তিনজনের ঠিকানা কর্ণফুলী মেরিন একাডেমী এলাকার। নদী ও সাগরে চুরি-ডাকাতির অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। বিভিন্ন সময়ে সমুদ্রগামী জাহাজ, লাইটারেজ ও বোট থেকে চুরি, ডাকাতিসহ নানান অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকারও অভিযোগ রয়েছে।
অনুসন্ধান বলছে, এই তিন ব্যক্তিকে কর্ণফুলীর বাসিন্দারা চেনেন ‘জলদস্যু’ হিসেবে। কথিত এই সোর্সরা প্রশাসনের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে নদী ও সাগরে লাইটারেজ ও বিশালাকারের জাহাজ থেকে স্ক্র্যাপ লোহা, ডিজেল ও ভাসমান জিনিসপত্র কিনছে অবৈধপথে। আবার তা বিক্রি করছে চট্টগ্রামের সদরঘাট থানার মাঝিরঘাটসহ নগরের বিভিন্ন দোকানে। সম্প্রতি সমুদ্রগামী জাহাজের কিছু যন্ত্রাংশ চুরির ঘটনায় চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থানায় একটি চুরি মামলার তদন্তে উঠে এসেছে খোদ তিনজনের নাম।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে হারুন বলেন, ‘ আমার নামে আক্কাস ও হারুনরা মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছেন। আমি কোস্টগার্ডের সঙ্গে কাজ করি বিধায় তারা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। আমার নামে কোনও সিন্ডিকেট নেই। আমি কোনো ধরনের ডিজেল ও স্ক্র্যাপ গোদামজাত করছি না। আপনি খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কর্ণফুলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দুলাল মাহমুদ বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি অবগত নই। আমি খোঁজ খবর নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
সিটিজি সান/এমবিইউ
