নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট : ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ শুক্রবার ০২:০০ এএম
পার্বত্য খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় উপজেলার প্রায় ১০ ট্রাক সরকারি গম চট্টগ্রামের পাহাড়তলিতে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে। আর এই সরকারি গম বিক্রির সাথে রামগড় খাদ্য গুদামে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদ ভূঁইয়া ও পরিবহণ ঠিকাদাররা জড়িত বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।
গত শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) থেকে মোট চার দিন চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সাইলো হয়ে এসব গম রামগড়ের উদ্দেশ্যে বের করা হলেও বিক্রি করে দেওয়া হয় পাহাড়তলী বাজারের একটি সিন্ডিকেটের কাছে।
জানা যায়, বাইরে বিক্রি করা এই গমের মূল্য প্রায় অর্ধকোটি টাকারও বেশি। তবে পাহাড়তলিতে গম প্রতিটন ২৭ হাজার ৫০০ টাকা দরে বিক্রি করা হয়েছে বলে কয়েকজন ব্যবসায়ী নিশ্চিত করেছেন।
চট্টগ্রাম সাইলো সূত্র জানায়, সরকারের নির্দেশনা মতে ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১০টি গমবাহী ট্রাক খাগড়াছড়িতে পাঠানো হয়।
এসব ট্রাকের মধ্যে রয়েছে— চট্ট মেট্রো – ট ১৮০৩৩৬ (১৪.৯৭০ মেট্রিক টন), চট্ট মেট্রো – ট ১১-৩৩০৬ (১৫ টন), চট্ট মেট্রো – ট ১৮-২৫১০ (১৪.৯৮৫ মেট্রিক টন), চট্ট মেট্রো – ট ৩৯৭৮ (১৫ টন), ফেনী – ট ১১-০৬৭৩ (১৪.৯৮০ মেট্রিক টন), ফেনী – ট ১১-০৬৭৬ (১৪.৯৯০ মেট্রিক টন), চট্ট মেট্রো – ট ১১-৫৬৯৫ (১৪. ৯৮০ মেট্রিক টন), ঢাকা মেট্রো – ১১-৫৫২৩ (১৪.৯৯৫ মেট্রিক টন), চট্ট মেট্রো – ট ১২-০২৬৩ (১৪. ৯৭৫ মেট্রিক টন), কুমিল্লা – ট ১১-০০৪৬ (১৪. ৯৯০ মেট্রিক টন)।
এসব ট্রাকের বেশির ভাগই রামগড় খাদ্য গুদামে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সবকটি ট্রাক পাহাড়তলি চালের আড়তে আনলোড করা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে পাহাড়তলির একাধিক ব্যবসায়ী জানান, ৩ সেপ্টেম্বর আনলোড করা হয়েছে দুটি গমবাহী ট্রাক, ৫ সেপ্টেম্বর দুই ট্রাক, ৬ সেপ্টেম্বর চার ট্রাক ও ৭ সেপ্টেম্বর দুই ট্রাক গম পাহাড়তলি বাজার আনলোড করা হয়েছে। ১০ ট্রাকের মধ্যে বেশির ভাগ আনলোড করা হয় ‘ফারুক ট্রেডিং’সহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে।
এদিকে সরকারি এই গম বিক্রির জন্য সংশ্লিষ্ট গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে দোষ দিয়ে দায়মুক্তির চেষ্টা করছেন এক পরিবহণ ঠিকাদার। তার ভাষ্য— বিভিন্ন গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ট্রাক চালকদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেন। ট্রাক চালকরা ট্রাকে গম লোড করার পর গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করেন। এরপর ঠিকাদারদের অগোচরে ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দেন। খাদ্য গুদামে পাঠানো হয় শুধু ইনভয়েস বা চালান কপি।
তবে এর বিপরীত ঘটনাও রয়েছে। সংশ্লিষ্ট খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, পরিবহণ ঠিকাদার ও ট্রাক চালকরা মিলে সরকারি গম চাল গন্তব্যে না নিয়েই পথে বিক্রি করে দিচ্ছে। আর এতে করে খাদ্য পরিবহণ খাতে প্রতিনিয়ত গচ্ছা দিচ্ছে সরকার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে খাগড়াছড়ির রামগড় খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদ ভূঁইয়া বলেন, ‘এই মুহুর্তে কী পরিমাণ গম মজুদ আছে এটা না দেখে বলা যাবে না। ট্রাকগুলোর নম্বরও এই মুহুর্তে মনে নেই। কিছুক্ষণ পর কল করলে জানানো যাবে।’
পরবর্তীতে একাধিকবার চেষ্টা করেও তার মুঠোফোনে সংযোগ পাননি এ প্রতিবেদক।
জেইউএইচ/আরএইচ/সিএস
Print This Post