
নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট : ৬ আগস্ট, ২০২১ শুক্রবার ০১:৫০ পিএম
চট্টগ্রামে করোনা শনাক্তের হার ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। হাজারের কোটা থেকে যেন নামছেইনা শনাক্ত। এর মধ্যেই করোনার অতিউচ্চসংক্রমণশীল ভারতীয় ‘ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট’ চট্টগ্রামের শহর ও গ্রামে ছড়িয়েছে সমানভাবে। আর এ ভ্যারিয়েন্ট সাধারণত অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে ৪০ গুণ বেশি সংক্রামক। চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের ৯৩ শতাংশই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের।— ৩০টি জিনোম সিকোয়েন্সের ফলাফলের মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিভাসুর একদল গবেষক।
শুক্রবার (৬ আগস্ট) চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) উপাচার্য ও গবেষকদলের প্রধান ড. গৌতমবুদ্ধ দাশ এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম নগর থেকে ১৫ জন এবং বিভিন্ন উপজেলা থেকে ১৫ জন করে মোট ৩০ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয় গত ১ জুলাই থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত। এই ৩০ জনের নমুনা বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদে (বিসিএসআইআর) পাঠানোর পর সেখানকার দুই গবেষক ড. মো. সেলিম খান ও ড. মো. মোরশেদ হাসান সরকার তত্ত্বাবধানে নমুনাগুলোর জিনোম সিকোয়েন্সিং বা পূর্ণাঙ্গ জীবনরহস্য উন্মোচন করা হয়।’
ড. গৌতমবুদ্ধ দাশ বলেন, ‘পরীক্ষার আওতায় আনা ৩০টি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স তথ্য গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডেটা (জিআইএসএআইডি) প্রতিষ্ঠানে জমা করা হয়েছে।’
জিনোম সিকুয়েন্সের ফলাফলে দেখা গেছে, করোনায় আক্রান্ত মোট ৩০ জনের নমুনার মধ্যে ২৮ জনই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত। শতকরা হিসেবে যা ৯৩ শতাংশ। আবার এদের মধ্যে ১৪ জন নগরের বাসিন্দা এবং ১৪ জন বিভিন্ন উপজেলার।
বাকি দুজনের মধ্যে নগরের কোতোয়ালি থানার পাথরঘাটা এলাকার এক বাসিন্দা যিনি আলফা ভ্যারিয়েন্টে (যুক্তরাজ্য) আক্রান্ত। অপরজন রাঙ্গুনিয়া উপজেলার এক বাসিন্দা। যার শরীরে মিলেছে করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীনের উহানের ভ্যারিয়েন্ট।
গবেষণায় দেখা গেছে, নমুনা নেয়া ৩০ জনের মধ্যে ১৫ জনকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।
ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের আধিক্যের কারণ জানতে চাইলে ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ বলেন, ‘চট্টগ্রামের মানুষজন চেন্নাইতে চিকিৎসার জন্য যায় এবং এটেনডেন্ট যায়। তারা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমিত হয়ে চট্টগ্রামে এসেছে। এই ভ্যারিয়েন্টটা অন্যান্য যে কোনো ভ্যারিয়েন্ট থেকে ৪০ শতাংশ বেশি সংক্রমিত করে।’
‘তাছাড়া বন্দর ও অন্যান্য ব্যবসায়িক কাজে দেশের বিভিন্ন জায়গায় লোকজনের যাতায়াতের মাধ্যমে এ ভ্যারিয়েন্ট চট্টগ্রামে ছড়াতে পারে।’— যোগ করেন তিনি।
পোল্ট্রি রিসার্চ ও ট্রেনিং সেন্টারের (পিআরটিসি) আর্থিক সহায়তায় এবং সিভাসু উপাচার্য ড. গৌতমবুদ্ধ দাশের নেতৃত্বে এ গবেষণায় অংশগ্রহণ করেন— প্রফেসর ড. পরিতোষ কুমার বিশ্বাস, প্রফেসর ড. শারমিন চৌধুরী, ডা. ইফতেখার আহমেদ রানা, ডা. ব্রিদীপ দাশ, ডা. প্রাণেশ দত্ত, ডা. মো. সিরাজুল ইসলাম ও ডা. তানভীর আহমদ নিজামী।
উল্লেখ্য, এর আগে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) করোনার ২২টি জীবন রহস্য উন্মোচন করেছিল।
রবিউল হোসেন/এমএ
