নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট : ১৩ এপ্রিল, ২০২১ মঙ্গলবার ১০:০০ এএম
সরকারি বিধিনিষেধ থাকা সত্ত্বেও চট্টগ্রামের ইপিজেড এলাকায় থেমে নেই জেলায় জেলায় যাত্রী পরিবহন। দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকারে। শুধু তাই নয়, এক্ষেত্রে মানা হচ্ছেনা সামাজিক দূরত্বও। কয়েকজন কাউন্টার ম্যানেজারদের যোগসাজশে প্রতি যাত্রীর কাছ থেকে পনেরো শ’ থেকে দুই হাজার টাকা করে নিয়ে নির্বিঘ্নে জেলায় জেলায় ছুটে চলেছে এসব মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকার। আবার এভাবে যাতায়াতে আগ্রহও রয়েছে যাত্রীদের।
ইপিজেড থানার হাসপাতাল গেইটে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সন্ধ্যার পরই অর্ধেক শাটার নামিয়ে খুলে রাখা হয়েছে দূরপাল্লার বাস কাউন্টারগুলো। কাউন্টারের সামনে ভিড় জমিয়েছেন যাত্রীরাও। কারও গন্তব্য বরিশাল, আবার কারও রংপুর বা খুলনা।
তেমনই একজন মশিউর। পেশায় তিনি বেসরকারি চাকুরিজীবী। লকডাউনে অফিস বন্ধ থাকায় তিনি যাবেন গ্রামের বাড়ি রংপুরে। তিনি প্রতিবেদককে বলেন, ‘অফিস বন্ধ থাকায় বাড়িতে চলে যাচ্ছি। সরকারি নির্দেশ মোতাবেক বাস বন্ধ থাকায় এই উপায় বেছে নিয়েছি। ভাড়া বেশি হলেও বাড়িতো যেতে পারবো।’
দেখা যায়, হঠাৎ একটি চট্ট মেট্রো-চ ১১-৮৭৮৬ নম্বর প্লেটযুক্ত মাইক্রোবাস এসে দাঁড়ায় কাউন্টারের সামনে। এসে দাঁড়াতেই লেগে যায় যাত্রীদের হুড়োহুড়ি। ১২ জন নেয়া গেলেও কোন কোন মাইক্রোবাসে নেয়া হচ্ছে ১৩-১৪ জন। আবার কেউই মানছেনা স্বাস্থ্যবিধি।
সূত্র জানায়, প্রতিদিন এভাবেই ৭-৮টি মাইক্রোবাসে করে যাত্রী আনা-নেওয়া করা হয় বিভিন্ন জেলায়। আর এসবের পেছনেও রয়েছে একটি সিন্ডিকেট। যাদের মধ্যে হারুন, জুয়েল, রশীদ, শাহীন, সাইদুল ও রনি অন্যতম।
কাউন্টার মালিক জুয়েলের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অবৈধ জেনেও গাড়ি ছাড়তে হয়। নাইলে আমরা খাব কি বলেন? আমিতো বেশিনা, প্রতিদিন ২ টা গাড়ি ছাড়ি। আরও অনেকে এইভাবে ছাড়ে।’
এদিকে আরেক কাউন্টার ম্যানেজার হারুন মাইক্রোবাসের টিকেট বিক্রির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘এসব টিকেট আমি বিক্রি করিনা। এগুলা জুয়েল নামে একজন আছে। উনি জানে। ওনাকে জিজ্ঞেস করেন।’
প্রতিবেদকের কাছে আপনি যাত্রী ওঠাচ্ছেন এমন প্রমাণও আছে— একথা বলার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি মুঠোফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
মূলত সন্ধ্যার পরপরই প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে এসব মাইক্রোবাস চলাচল করে বলে জানায় স্থানীয়রা। তবে এ ব্যাপারে প্রশাসনের যথেষ্ট তদারকি নেই বলেও অভিযোগ করছেন এলাকাবাসী।
এবিষয়ে জানতে ইপিজেড থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) উৎপল বড়ুয়ার মুঠোফোনে কল করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে অপারেশন অফিসার (এসআই) সাজেদ কামালের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন।
রবিউল হোসেন রবি/সিএস