
নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট : ২৪ মার্চ, ২০২১ বুধবার ০১:০০ এএম
বারিক বিল্ডিং মোড় হতে সদরঘাট পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার সড়কজুড়ে কেবলই ধুলোর রাজত্ব। বর্তমানে শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে বেড়েছে ধুলোর পরিমাণও। প্রতিমুহূর্তে ওই এলাকার কর্মব্যস্ত মানুষদের চলাচল করছেন এই ধুলোর সঙ্গে যুদ্ধ করেই। যার ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন স্থানীয় সহ পথচারিরা।
এদিকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) কোনো সময় ধুলোবালির প্রকোপ থেকে বাঁচাতে পানিও ছেটায় না— রয়েছে এমন নানা অভিযোগও।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, সদরঘাট হতে মাঝিরঘাট, বাংলাবাজার, স্ট্যান্ড রোড হয়ে বারিক বিল্ডিং পর্যন্ত সড়কজুড়ে পুরোটাই ধুলোর রাজত্ব। সকাল থেকেই এ সড়কে চলাচলকারী কর্মব্যস্ত মানুষ মাস্ক মুখে দিয়ে বা নাকে রুমাল-কাপড় চেপে বের হচ্ছেন। এতে মানুষের মধ্যে বিরাজ করছে চরম অস্বস্তি।
দেখা যায়, ধুলোর আস্তরণ পড়ে আশেপাশের গাছপালা বিবর্ণ হয়ে গেছে। ধুলোর কারণে আশেপাশের বাসা-বাড়ির বাসিন্দারা পড়েছেন মহাবিপাকে। দরজা-জানালা বন্ধ করেই মিলছেনা ধুলো থেকে রেহাই। একইসঙ্গে রাস্তার পাশের দোকানিরাও পোহাচ্ছেন সীমাহীন দুর্ভোগ।
এছাড়াও সড়ক জুড়ে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় গর্ত। যার ফলে যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে উঠেছে সড়কটি।
জানা যায়, সদরঘাট হতে বারিক বিল্ডিং পর্যন্ত সড়কটির উন্নয়ন কাজ দুই বছরের বেশি সময় ধরেও শেষ হচ্ছেনা। এ সড়কে তিনটি কালভার্ট নির্মাণ হলেও শেষ হয়নি কার্পেটিংয়ের কাজও।
স্থানীয়রা জানান, নৌযান থেকে আমদানিকৃত নানান পণ্য খালাসের অসংখ্য জেটিসহ বেশ কয়েকটি লবন মিল, কয়েকশত গোডাউন রয়েছে এ সড়কের দুপাশে। যে কারণে প্রতিদিন দিনেরাতে শত শত ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ও লরি আসা যাওয়া করে সড়কটি দিয়ে।
মাঝিরঘাট এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা মো. শরীফ বলেন, ‘আমি প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে অফিসে যাতায়াত করি৷ কি যে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয় তা বলার ভাষা নেই। একদিন একটা শার্ট পড়ে বের হলে পরদিন ওই শার্ট গায়ে জড়ানো যায় না।’
তিনি বলেন, ‘এই এলাকায় প্রতিদিন শত শত ট্রাক আসা যাওয়া করে। যার ফলে রাস্তার এই অবস্থা। অথচ এটি নিয়ে সিটি কর্পোরেশন, সিডিএ বা পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন মাথা ব্যাথাই নেই। পানি ছিটানোর কথা থাকলেও সিটি কর্পোরেশন এমন কোন উদ্যোগ নেয়নি।
মা ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের মালিক মো. মোরশেদ বলেন, ‘চট্টগ্রামের বাণিজ্যিক এলাকা খ্যাত এই মাঝিরঘাট-সদরঘাট এলাকায় ধুলোবালির কারণে সবাই অতিষ্ঠ। এর প্রতিকার কি? রাস্তা-ঘাটের মা-বাপ নাকি সিটি করপোরেশন? কই তাঁদের তো একদিনও পানি ছেটাতে দেখিনি!’
এবিষয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হকের কাছে জানতে চাইলে তিনি ছুটিতে আছেন জানিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, প্রতিবছর অপরিণত বয়সে ৭০ লাখ মানুষ মারা যায় বায়ু দূষণের কারণে। এর কারণে আলঝেইমারস এবং স্মৃতিভ্রম ঝুঁকিও তৈরি হয়।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, বায়ু দূষণের ফলে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। এছাড়া ফুসফুসের (শ্বাসতন্ত্রের) নানা ধরনের জটিল সংক্রমণ রোগ হয়। যার মধ্যে রয়েছে শ্বাসকষ্ট, ক্রনিক অ্যাজমা, স্নায়ুতন্ত্রের রোগ, ক্যানসার, ইত্যাদি।
আরএইচ/সিএস
