জলাবদ্ধতা প্রকল্পের অগ্রগতি দেখা যাবে আগামী বছরের জুনে!

আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১০:০০ পূর্বাহ্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট : ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০ রবিবার ১০:০০ এএম

চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) নেয়া প্রকল্পের অগ্রগতি দেখতে আগামী বছরের জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক কর্নেল আবুল হাসনাত মো. সায়েম।

শনিবার (১২ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষের প্রথমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা জানান।

প্রকল্পের নানা বিষয় তুলে ধরে কর্নেল আবুল হাসনাত মো. সায়েম বলেন, ‘এই প্রকল্পের অধীন ২৪০ কিলোমিটার ড্রেন পরিষ্কার করা হয়েছে। ১৭৬ কিলোমিটার রিটার্নিং ওয়ালের কাজ চলছে। ৫৫ কিলোমিটারের কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। ৫৪টি ব্রিজ ও কালভার্ট আছে, এর মধ্যে ৩৪টি ব্রিজ-কালভার্টের কাজ শেষের দিকে।’

কর্নেল সায়েম বলেন, ‘এই প্রকল্পে কর্ণফুলী নদীর সাথে খালে পাঁচটি রেগুলেটর আছে, যার সিংহভাগ কাজ শেষ হয়েছে।’ তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘আগামী জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির মধ্যে সম্পন্ন করতে পারব। এই রেগুলেটরগুলোর কাজ যখন সম্পন্ন হয়ে যাবে, জোয়ারের কারণে যে জলাবদ্ধতা হয় তা বন্ধ হয়ে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘এ বছর আপনারা লক্ষ করেছেন, কোনো জায়গায় পানি জমে ছিল না, জলাবদ্ধতা হয়নি। জলাবদ্ধতা হয়েছে শুধু জোয়ারের কারণে।’

কর্নেল আবুল হাসনাত মো. সায়েম এই প্রকল্পকে আবারও চ্যালেঞ্জিং প্রকল্প উল্লেখ করে বলেন, ‘এই প্রকল্পে তিন হাজার ১৫০টির মতো স্থাপনা উচ্ছেদ করতে হয়েছে। যার মধ্যে বহুতল ভবনও ছিল। এখনও অবৈধস্থাপনা উচ্ছেদ করতে হচ্ছে। এটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল।’

তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয়ত হচ্ছে- এসব এলাকায় অনেকগুলো ইউটিলিটি লাইন ছিল যেগুলোকে স্থানান্তর করতে হয়েছে। যা বিভিন্ন সংস্থার সাথে সমন্বয় করে আমাদের করতে হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও দ্রুততা ও দক্ষতার সাথে আমরা কাজগুলো এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।’ পূর্ণোদ্দমে কাজ চলছে জানিয়ে সেনা কর্মকর্তা সায়েম বলেন, ‘আপনারা আগামী বছর জুনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখতে পাবেন।’

এ জন্য তিনি খাল-ড্রেনে বর্জ্য না ফেলায় জনসচেতনতা সৃষ্টিতে সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেন। বলেন, ‘যেন পরিষ্কার করা খাল-নালা বর্জ্যের কারণে আগের অবস্থায় ফিরে না আসে।’

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ বলেন, ‘এবার চট্টগ্রাম শহরে জলাবদ্ধতা হয়নি। কিছু জায়গায় জোয়ারের পানি উঠেছে। স্লুইচ গেট বন্ধ করে দিলে সেটার সমাধানও হয়ে যাবে। এই কাজটি বন্ধ ছিল। আমি দায়িত্ব নেয়ার পর আবার শুরু করেছি। গত এক বছরে আমরা অনেক দূর এগিয়ে গেছি।’

সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম মহানগরীর নতুন মাস্টারপ্ল্যান তৈরির কথা জানিয়ে সিডিএ চেয়ারম্যান বলেন, ‘চট্টগ্রাম শহর নিয়ে মাস্টারপ্ল্যান তৈরির কাজ শিগগিরই শুরু হবে। মাস্টারপ্ল্যান তৈরির কাজ এখন প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এতে সব শ্রেণির মানুষের মতামত নেয়া হবে।’

সিডিএ চেয়ারম্যান অনন্যা উপশহর প্রকল্প তৈরির কাজ হাতে নেয়া হয়েছে বলে জানান। দোভাষ বলেন, ‘শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়নের কাজ চলছে। সিডিএর মাধ্যমে প্রকল্পটি সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোর করছে। এ প্রকল্পে ৩৫ শতাংশ আর্থিক অগ্রগতি এবং ৫০ শতাংশ ভৌতি অগ্রগতি হয়েছে।’

এম জহিরুল আলম দোভাষ বলেন, ‘কর্ণফুলী নদীর তীর বরাবর কালুরঘাট সেতু থেকে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক কাম বাঁধ নির্মাণের একটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এই প্রকল্পের প্রায় ২৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।’

এ সময় সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি শাহীনুল ইসলাম খানসহ সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সিএস