ইপিজেডে সংগঠনের নামে চলছে পাঁচশ’ টেম্পো!

আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৭ ১:০৭ অপরাহ্ন

tempo

চট্টগ্রাম : নেই বিআরটিসির গাড়ির রেজিস্ট্রেশন, নেই রুট পারমিট। অবৈধ গাড়ির পার্কিং। রাস্তায় যানজট সৃষ্টি করে সংগঠনের রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়ে চলছে পাঁচ শতাধিক সিএনজি চালিত অটোটেম্পো।

চট্টগ্রাম নগরীর ইপিজেড থেকে শাহ আমানত বিমানবন্দর সড়কে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে চলছে এসব টেম্পো। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি, জামায়াত সমর্থিত চারটি সংগঠনের নামে চলছে এসব যানবাহন।

এরমধ্যে চট্টগ্রাম অটোরিকশা-অটোটেম্পো শ্রমিক ইউনিয়ন-১৪৪১ সংগঠনের রেজিস্ট্রেশনের পরিচালনায় আছেন সাবেক জামায়াত নেতা হারুন ওরফে বোমা হারুন ও নাসির কোম্পানি। এই রেজিস্ট্রেশনের আওতায় চলছে প্রায় দেড়শ’টি সিএনজি অটোটেম্পো।

সংগঠন ২২৩০ রেজিস্ট্রেশনের পরিচালনায় আছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মোশারফ প্রকাশ বরিশ্যাল্লা মোশারফ। এই সংগঠনের নামে চলছে প্রায় দেড়শ’টি টেম্পো। সংগঠন ১৩৪৯ রেজিস্ট্রেশনের নামে চলে প্রায় দেড়শ’টি। এটি পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা আব্দুল্লাহ। সংগঠন ১৪২৭ রেজিস্ট্রেশনের নামে চলছে ৫০টি। এটি পরিচালনা করেন বিএনপি নেতা ইয়াসিন।

টেম্পোচালকরা জানান, এ লাইনে টেম্পো চালাতে সংগঠনগুলোর রেজিস্ট্রেশন নম্বর প্লেট কিনতে হয়। এ জন্য দিতে হয় এককালীন ২০ হাজার টাকা। মাসিক আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার টাকা নেয় গাড়ির মালিকপক্ষ। দৈনিক ১০০ টাকা নেয়া হয় লাইন চার্জ। যা ড্রাইভার থেকে নেয়া হয়।

জানতে চাইলে মো. আবদুল নামে এক টেম্পোচালক বলেন, সড়কে গাড়ি চালাতে বিআরটিসির রেজিস্ট্রেশন ও রুট পারমিট লাগে। কিন্তু বিআরটিসির রেজিস্ট্রেশন ও রুট পারমিট নিলেও সংগঠনগুলোকে তাদের নির্ধারিত টাকা দিতে হয়।

সংগঠনগুলোকে টাকা দিলে বিআরটিসির রেজিস্ট্রেশন ও রুট পারমিট লাগে না। তাই প্রথমে কেউ কেউ রেজিস্ট্রেশন ও রুট পারমিট নিলেও এখন কেউ নেয় না। চার সংগঠনের নামে প্রায় পাঁচশ’রও বেশি টেম্পো এ সড়কে চলাচল করছে বলে জানান তিনি। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ২২৩০ রেজিস্ট্রেশনের পরিচালক মোশারফ নিজেকে আওয়ামী লীগ নেতা দাবি করে বলেন, ‘ইপিজেড থানার পুলিশ, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর ও স্থানীয় নেতাদের টাকা দিয়ে এসব গাড়ি চলে। এককালীন নির্দিষ্ট অ্যামাউন্ট নিয়ে মাসিক দুই হাজার টাকা নেয়া হয় প্রতিটি গাড়ি থেকে’।

এ ব্যাপারে ১৩৪৯ সংগঠনের পরিচালক আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আমরা সরকার দলের লোক। সরকারিভাবে গাড়িগুলো চলে। অনুমোদনের দরকার হয় না। স্থানীয় লোকজন জানান, এসব গাড়িগুলো ইপিজেড থেকে কাটগড় হয়ে শাহ আমানত বিমানবন্দর পর্যন্ত চলে। এসব গাড়ির কারণে প্রতিদিন অসহনীয় যানজটের কবলে পড়ছে গামের্নট শ্রমিক ও সাধারণ মানুষ। এছাড়া যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করারও অভিযোগ আছে।

ইপিজেড থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সৈয়দ মো. আহসানুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলেন, এসব টেম্পো থেকে আমরা কোনো টাকা খাই না। এগুলো কিভাবে চলে তা ট্রাফিককে বলুন। এসব নিয়ে আমরা মাথা ঘামায় না।

ইপিজেড থানার ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) মো. জসিম উদ্দীন বলেন, ‘অবৈধ যানবাহন যেগুলো চলছে সেগুলো আমরা নিয়মিত অভিযানে টু করছি। ইপিজেডের কিছু টেম্পোর বিআরটিসির অনুমোদন আছে। অনুমোদনহীন যেসব গাড়ি আছে ঐগুলোর বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে’।

Print This Post Print This Post