বাড়ছে বিধবা চট্টগ্রামে, ভাতাভোগী কম

আপডেট: ২ মার্চ ২০১৮ ১২:৫৭ অপরাহ্ন

চট্টগ্রাম :

সারাদেশের ন্যায় চট্টগ্রামেও প্রতিদিন ১০ শতাংশ হারে বাড়ছে ভাতা ভোগীদের সংখ্যা। বয়স্ক ভাতার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ভাতা বরাদ্দ। সে তুলনায় আবেদন বেশি থাকলেও বাড়ছে না বিধবা ভাতার বরাদ্দ। জনসংখ্যার দিক থেকে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলায় রয়েছে সর্বোচ্চ ১৩ হাজার ৩৯৭ জন বয়স্ক। সর্বোচ্চ সংখ্যক ৪ হাজার ৩১১ জন বিধবাও এই উপজেলায়।

জানা গেছে, ১৯৯৭-১৯৯৮ অর্থবছরে বয়স্ক ভাতা কার্যক্রম শুরু হয়। পরের বছরই চালু হয় বিধবা ভাতা। ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে চট্টগ্রামে বয়স্ক ভাতাগ্রহীতার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় দেড় লাখ। অথচ বিধবা ভাতা গ্রহীতার সংখ্যা ৪০ হাজার ১২৬ জন। যা বয়স্ক ভাতাগ্রহীতার এক তৃতীয়াংশেরও কম।

বয়স্ক ও বিধবা ভাতা প্রদান ১০০ টাকা হারে শুরু হয়। ২০০৯-১০ অর্থ বছরে দুটির পরিমাণই ৩০০ টাকা বাড়ানো হয়। কিন্তু পরের বছরই বয়স্ক ভাতার পরিমাণ ৫০০ টাকায় পরিণত হলেও বিধবা ভাতা ৫০০ টাকায় বরাদ্দ হয়েছে তার ৬ বছর পরে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে।

২০১৭ সালের জুলাই মাস থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত চট্টগ্রামের বয়স্ক ভাতাভোগীদের মাঝে সরকার বিতরণ করেছে ৪৮ কোটি ৮১ লাখ ৭ হাজার টাকা। অন্যদিকে বিধবা ভাতা বিতরণ করা হয় ১২ কোটি ৩ লাখ ৭৮ হাজার টাকা।

জেলা সমাজসেবা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামে ১৯৯৭-১৯৯৮ সাল থেকে চট্টগ্রামে নিয়মিত বয়স্ক ভাতাগ্রহীতা রয়েছে ১ লাখ ৩৫ হাজার ৮৩৭ জন। গত অর্থবছরে আরো ১০ শতাংশ অর্থাৎ ১৩ হাজার ৫১২জন বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে নতুন করে তালিকাভুক্ত করেছে সরকার। জনসংখ্যার ভিত্তিতে চট্টগ্রামে সবচেয়ে বেশি বয়স্ক ভাতাগ্রহীতা ফটিকছড়িতে। এরপরই আছে পটিয়াতে ১২ হাজার ৩৬৪ জন। সবচেয়ে কম বয়স্ক ভাতাগ্রহীতা মহানগরের ১ নম্বর এলাকায় ২ হাজার ৩৩১ জন।

কার্যক্রম শুরুর সময় থেকে বিধবা ভাতা গ্রহীতার সংখ্যা ৩৬ হাজার ৬৪৫জন। গত এক বছরে নতুন করে তালিকাভুক্ত হয়েছে ৩ হাজার ৪৮১ জন বিধবা। জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের সূত্র অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি বিধবা ফটিকছড়িতে ৪ হাজার ৩১১জন। সবচেয়ে কম বিধবা বোয়ালখালী উপজেলায় ১ হাজার ৮০৫জন।

জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম বলেন, দুস’ ও স্বল্প উপার্জন অথবা উপার্জনে অক্ষম বয়স্ক ও বিধবা জনগোষ্ঠীর সামাজিক নিরাপত্তার জন্য সরকার এসব ভাতা চালু করেছে। পুরুষদের ক্ষেত্রে ৬৫ ও মহিলাদের ক্ষেত্রে ৬২ বছর বয়স গ্রহণযোগ্য। তবে বিধবা ভাতার ক্ষেত্রে ১৮ বছরের উপরে যে কোনো মহিলাই ভাতা পেতে পারে। সেক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়স্ক ও শারীরিকভাবে অক্ষম মহিলারা অগ্রাধিকার পাবেন।

বিধবা ভাতার জন্য অসংখ্য আবেদন জমা পড়লেও বরাদ্দ না থাকায় নতুন করে তালিকাভুক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, বয়স্ক ভাতার জন্য দিন দিন বরাদ্দের পরিমাণ বেড়েছে। কিন’ দুটি ভাতা কার্যক্রমই সমসাময়িক চালু হলেও বয়স্ক ভাতার মতো বিধবা ভাতার ক্ষেত্রে বরাদ্দ বাড়েনি। বিধবা ভাতার জন্য আমাদের কাছে অনেক আবেদন জমা পড়ছে। কিন্তু সেই অনুপাতে বাজেট কম। এ বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে জানিয়েছি। সরকার যদি বয়স্ক ভাতার মতো বিধবা ভাতায়ও বরাদ্দ বাড়ায়, তাহলে উপকারভোগীর সংখ্যাও বাড়বে।

Print This Post Print This Post