বিশ্ববাসীকে এক রোহিঙ্গার চিঠি

আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ৫:০৪ অপরাহ্ন

rohinga
অনলাইন ডেস্ক :
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বাসিন্দা মোহাম্মদ আসন। এক সপ্তাহ আগে ২৪ বছরের আসন মিয়ানমারের সহিংসতা থেকে বাঁচতে সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে ঢোকেন।

টেকনাফে রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে আল-জাজিরার সাংবাদিক কেটি আর্নল্ডকে আসন বলেন, ‘বিশ্ব সম্প্রদায়ের উচিত মিয়ানমারকে চাপ দেওয়া যাতে আমরা দেশে ফিরে যেতে পারি। বাংলাদেশ আমাদের দেশ নয়।’

বিশ্ববাসীর কাছে অনুরোধ জানিয়ে আসন বলেন, ‘মিয়ানমারে আমাদের অধিকার ফিরিয়ে দিতে সহায়তা করুন।’ তিনি বলেন, ‘বৌদ্ধ সম্প্রদায় শান্তিতে রয়েছে। তাহলে কেন আমরা পারব না? আমরা ধর্ম নিয়ে কোনো সংঘাত চাই না। আমরা কেবল আমাদের ধর্ম পালন করতে চাই।’

আসন বলেন, তিনি রাখাইনের একটি স্কুলে ইংরেজি ও বার্মিজ পড়তেন। এরপর তিনি ইংরেজি শিখতে শুরু করেন, যাতে রোহিঙ্গাদের সাহায্য করতে পারেন। নিজেদের সমস্যা ইংরেজিতে বিশ্বকে জানাতে পারেন।

আসন আরও বলেন, ‘আমি রাখাইনে সুখী ছিলাম না। আমাদের কোনো স্বাধীনতা ছিল না। এমনকি আমার দোকান থেকে দেশের অন্য কোনো জায়গায় আমি পণ্যও সরবরাহ করতে পারতাম না। অনেক বেশি নিষেধাজ্ঞার কারণে আমার জীবন কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল।’

আসন বলেন, ‘আমি মনে করতে পারি, যখন সেনাবাহিনী আমাদের গ্রামে এল, তখন গুলি করা শুরু করল। আমার এক প্রতিবেশী এত বেশি অত্যাচারিত হয়েছিল যে ছুরি নিয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়েছিলেন। মিয়ানমার সেনাবাহিনী তাঁকে আমার চোখের সামনে গুলি করে। মিয়ানমার সেনাবাহিনী অনেক বছর ধরে আমাদের ওপর অত্যাচার চালাচ্ছে। মারধর করছে। চলাফেরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করছে। এখন তারা আমাদের গুলি করছে। আমি এভাবে বাঁচতে পারব না। তাই আমি বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছি।’

নিজের কষ্টের কথা জানিয়ে আসন আরও বলেন, ‘কত কষ্টে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে এসেছি, তা কেউ জানে না। কেবল একটি লুঙ্গি নিয়ে গ্রাম ছাড়তে হয় আমাকে। তবে এখনো যে রোহিঙ্গারা ওখানে রয়েছে, তাদের নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন। কে জানে, তাদের সঙ্গে কী হতে যাচ্ছে।’

Print This Post Print This Post