আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে চাপ আসছে: প্রধানমন্ত্রী

আপডেট: ৩১ অগাস্ট ২০১৮ ৯:০৭ অপরাহ্ন

অনলাইন ডেস্ক, ঢাকা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শিশুদের ঘাড়ে পা রেখে একদল ফায়দা নিতে চেয়েছিলো। এদের অনেকে আঁতেল, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ায় দেশি বিদেশি চাপ আসছে।

শুক্রবার গণভবনে ছাত্রলীগের শোক দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

এ সময় নিরাপদ সড়কের আন্দোলনের মধ্যে আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহল থেকে ‘চাপ’ এলেও তাতে নতি স্বীকার না করার দৃঢ়তার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, “নীতির প্রশ্নে আপস নাই, এটাই হচ্ছে আমার কথা।”

সাম্প্রতিক নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “শিশুরা রাস্তায় নেমেছে। শিশুদের ক্ষোভ, বিক্ষোভ; তাদের যে বিক্ষুব্ধ মন, সেটাকে কাজে লাগিয়ে ওই শিশুদের ঘাড়ে পা দিয়ে ফায়দা লুটবার জন্য একদল নেমে পড়ল।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “অনেকে অনেক জ্ঞানী-গুণী, অনেক অনেক আঁতেল, আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন…আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্নরা কী করেছে? ডিজিটাল বাংলাদেশ আমি করে দিয়েছি, আর তারই সুযোগ নিয়ে স্যোশাল মিডিয়াতে এবং বিভিন্ন জায়গায় অপপ্রচার চালিয়ে মানুষকে মিথ্যা প্রচার চালিয়েছে।”

‘মিথ্যা প্রচারের’ কারণে শিশুদের জীবন ঝুঁকির মুখে পড়তে পারত, সে কথা না ভেবে শিশুদের বিক্ষোভকে ব্যবহার করে ‘ফায়দা লোটার’ চেষ্টা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “তাদের বিরুদ্ধে যখন ব্যবস্থা নিলাম, তখনই চারিদিকে যেন হাহাকার। আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকেও বিভিন্ন রকম চাপ। দেশে-বিদেশে সকলের মাথায় রাখা উচিত।”

স্কুল জীবন থেকে প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে সক্রিয় থাকার কথা তুলে ধরে বঙ্গবন্ধু কন্যা হাসিনা আলোচনা সভায় বলেন, “আইয়ুব খান পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ছিল। স্কুলে একটা চ্যাপ্টার ছিল পাকিস্তান চ্যাপ্টার, ২০ নম্বর। আমি মেট্রিক পরীক্ষা দিয়েছিলাম ওই ২০ নম্বর বাদ দিয়ে। কারণ আমি আইয়ুব খানের প্রশংসা লিখব না, আমি লিখতে পারি না। কাজেই আমি সেই মানুষ। ২০ নম্বরের জন্য ফেলও করতে পারতাম।”

শেখ হাসিনা বলেন, ছাত্ররাজনীতি করলেও সে সময় তিনি নেতা হননি। সংগঠনের প্রয়োজনে যেখানে দায়িত্ব দিয়েছে, সেখানে দায়িত্ব পালন করেছেন তারা সব ভাই-বোন।

আওয়ামী লীগ যখন সভাপতি বানাল তখনই দায়িত্বে এসেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের মানুষের জন্য রাজনীতি করেছি। যে দুঃখী মানুষের জন্য আমার বাবা, মা, ভাইবোন জীবন দিয়ে গেছেন, তাদের জন্য কাজ করি।”

তিনবার ক্ষমতায় থাকলেও নিজের ওই অবস্থান বদলায়নি দাবি করে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “আমিতো আমাকে পরিবর্তন করিনি। তাঁতের শাড়ি বাদ দিয়ে শিফন শাড়ি পরিনি, এই মেকাপ ওই মেকাপ করতে হবে ভাবিনি।”

শোক দিবসের এই আলোচনাসভায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বঙ্গবন্ধুর আদর্শ মেনে চলার তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী।

“আমরা তার আদর্শের কথা বলি। আদর্শ শুধু মুখে বলার নয়। আদর্শ অনুসরণ করার, আদর্শ অনুশীলন করার। আদর্শকে মেনে নেওয়া, আদর্শ মেনে চলা- এটাই হচ্ছে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। সেটা যদি হয়; দেশকে কিছু দেওয়া যায়, দেশের জন্য কিছু করা যায়।”

ছাত্রলীগকে তাদের আদর্শ- ‘শিক্ষা, শান্তি, প্রগতি’ মেনে চলার নির্দেশ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “নিজেদের আর্দশের নেতা হিসাবে গড়তে পারলে কিছু করতে পারবে। আর যদি সম্পদের লোভে গা ভাসিয়ে দাও, তাহলে হারিয়ে যাবে, ভেসে যাবে। বহু ছাত্র নেতা চলে গেছেন।”- শীর্ষনিউজ

Print This Post Print This Post