মায়ের পরকীয়ার বলি শিশু জিসান

আপডেট: ৮ জুলাই ২০১৭ ৮:২৩ অপরাহ্ন

satkania
চট্টগ্রাম : মিজানুর রহমান জিসান। বয়স সাত বছর। এই দুনিয়ার কঠিন সে না বুঝলেও দুনিয়ার সমীকরনের বলি হয়ে পরপারের বাসিন্দা হতে হলো জিসানকে। অত্যন্ত নির্মমভাবে হত্যা করে লাশটিও গুম করার জন্য তার লাশটিকে বাড়ির পাশের ডোবায় মাটির নিচে পুতে পেলে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত আলী আহমদ (৩৫)।

পরে ঘটনার অন্তত আট ঘন্টা পর লোকজনের সন্দেহবসত আলী আহমদকে স্থানীয়রা আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে খুনের ঘটনা স্বীকার করে লাশের সন্ধান দেন। স্থানীয় লোকজন ডোবার কিনারায় মাঠির নিচ থেকে জিসানের লাশ উদ্ধার করে। এসময় জিসানের পা দুটি ছিল উপরমুখী।

গত শুক্রবার দিনে এ হৃদয়বিদারক ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিন চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার চরতী ইউনিয়নের দক্ষিন চরতী গ্রামে। পুলিশ ঘটনার খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করেন এবং জনতার হাতে আটক আলি আহমদকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন।

এ ব্যাপারে সাতকানিয়ার থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই সিরাজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এ বিষয়ে সাতকানিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা ও অপরটি পুলিশের উপর হামলার মামলা মিলিয়ে দুটি পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল জলিল। জিসান হত্যাকন্ডের বিষয়ে বিস্তারিত জানা না গেলেও জিসানের মায়ের পরকিয়ার কারনেই জিসানকে হত্যা করা হয়েছে বলে একাধিক সূত্র দাবী করছে।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, জিসানের মায়ের সাথে পরকিয়া ছিল আলী আহমদের। সেই সূত্রে আলী আহমদ জিসানদের বাড়িতে নিয়মিত যাওয়া আসা করত। ঘটনার কয়েক দিন আগে উপরোক্ত বিষয় নিয়ে জিসানের মায়ের সাথে আলী আহমদের ঝগড়ার হয়, ঝগড়ার সময় আলি আহমদ জিসানের মাকে কাদিঁয়ে ছাড়বে বলে হুংকার দেয়।

এর মধ্যে গত পরশু শুক্রবার সকাল সাড়ে দশটার সময় সাতকানিয়ার চরতী ইউনিয়নের দক্ষিণ চরতী এলাকার মৃত ইয়াকুব হোসেনের পুত্র আলী আহমদ জাল দিয়ে মাছ ধরতে সাঙ্গু নদীতে যাওয়ার সময় তার সাথে পাশ্ববর্তি আবুল হাসেমের পুত্র মিজানুর রহমান জিসানকেও সাথে নিয়ে যায়। দুপুরে আলী আহমদ মাছ ধরে ফিরে আসলেও জিসান আসেনি। দুপুরে জিসানকে না পেয়ে বিভিন্ন জায়গায় খোজঁ খবর করেও জিসানের খোজঁ না পাওয়াতে জিসানের আলী আহমদকে তার ছেলে কোথাই জিজ্ঞেস করেন। তাতে আলী আহমদ ক্ষিপ্ত হয়ে জিসান কোথাই আছে জানে না বলে জানান। এবং জিসানের বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে এক সময় একেক ধরনের কথা বলতে থাকেন।

এতে স্থানীয় লোকজনের সন্দেহ হলে আলী আহমদকে আটক করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে সেই ডোবার মধ্যে জিসানের লাশ দেখিয়ে দেয়। পরে স্থানীয় লোকজন লাশ উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসে। খবর পেয়ে থানা পুলিশের পরির্দশক (তদন্ত) আব্দুল জলিল সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে জনতার হাতে আটককৃত আলী আহমদকে উদ্ধার করতে গেলে পুলিশ আলী আহমদকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

থানার পরির্দশক (তদন্ত) আব্দুল জলিল বলেন, আলী আহমেদ’র বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে।

Print This Post Print This Post