জামায়াত নিয়ে সন্দেহ-সংশয়ে খালেদা জিয়া

আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৭ ৯:৩৬ পূর্বাহ্ন

image-27849-1491795144

অনলাইন ডেস্ক :: জামায়াতের সঙ্গে প্রায় দেড় যুগ ধরে জোটবদ্ধ থাকার পরও দলটিকে নিয়ে সন্দেহ-সংশয়ের কথা জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তার অনুমান, জামায়াতের সঙ্গে সরকারের বন্ধুত্ব রয়েছে। এটা তারা নানা সময় ব্যবহার করে। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে জামায়াতের প্ররোচণাতেই বিএনপি অংশ নিয়েছিল বলেও জানিয়েছেন তিনি। খবর ঢাকাটাইমসের।

রবিবার গভীর রাতে গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে বিএনপি নেত্রী এ কথা বলেন। সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচনে বিজয়ী বিএনপি-জামায়াতপন্থী আইনজীবী নেতারা দেখা করতে গেলে খালেদা জিয়া দীর্ঘ বক্তব্য দেন।

বিএনপি নেত্রী বলেন, ‘এরশাদের সাথে আতাঁত করে আওয়ামী লীগ ৮৬ সালে নির্বাচনে গিয়েছিলো। আমরা যাইনি। তারা (আওয়ামী লীগ) তখন সঙ্গী খুঁজে পায় না। একলা গেলে খারাপ দেখায়, সেজন্য জামায়াতে ইসলামকে সাথে নিয়ে নির্বাচনে গেলো।এখন জামায়াতে ইসলাম রাজাকার, খারাপ। তখন কিন্তু নিজামী সাহেবের (মতিউর রহমান নিজামী) সাথে মিটিং-টিটিংয়ের ফটো-টোটোগুলো আছে, মওদুদ সাহেবেও সাক্ষী আছে।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদকে সাক্ষী রেখে খালেদা জিয়া এসব কথা বলেন। বিএনপি নেত্রীর পেছনের আসনে বসা মওদুদ আহমেদ তখন চেয়ারপারসনের কাছে এসে স্বল্প কন্ঠে বললেন, ‘ম্যাডাম আমি তো গিয়েছিলাম। ছবি আছে।’

খালেদা জিয়া বলেন, ‘হয়ত আপনি (মওদুদ আহমদ) মাইন্ড সেট করে রেখেছিলেন, বিএনপিতে আসবেন। একটা রেকর্ড রেখেছিলেন। ওই সব ছবিতে তারা কীভাবে মিটিং করছেন, কেউ সালাম করছেন, কেউ ঝুঁকে সালাম করছেন, নানা রকমের অঙ্গভঙ্গি ছবি আছে।’

খালেদা জিয়া বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সখ্যতা কাদের বেশি ছিলো? তাদের (আওয়ামী লীগ) ছিলো। এখনো আছে, এখনো বন্ধুত্ব ঠিকই আছে, সে যায়নি। বিএনপিকে হারানো জন্য বা বিএনপিকে ইয়ে করার জন্য তারা সময়মত ব্যবহার করে।’

২০০৮ সালের নির্বাচনে অংশ নেয়ার ব্যাপারে আপত্তি থাকার কথা উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার ও নেতাদের মুক্তির শর্তে আমরা নির্বাচনে গিয়েছিলাম। নির্বাচনে যাওয়াটার ব্যাপারে আমি সন্তুষ্ট ছিলাম না। কিন্তু আমাদের সঙ্গে যারা (জামায়াত) ছিলো তারা খুব বেশি আগ্রহী ছিলো, নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপারে। তারা বললো, নির্বাচনে যেতেই হবে, নির্বাচনে না গেলে ক্ষতি হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। তখন তাদের কথা শুনে আমরা নির্বাচনে গেলাম।’

বিএনপির প্রতিষ্ঠার পর ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনেই সবচেয়ে খারাপ ফল করে তারা। সে সময় তারা ৪০টিরও কম আসন পেয়েছিল আর ২০০১ সালের নির্বাচনের তুলনায় ভোট কমেছিল শতকরা আট শতাংশ। খালেদা জিয়া বলেন, ‘সেই নির্বাচনে যে ফলাফল বিএনপির এটা কখনোই হতে পারে না। বিএনপিকে হিসাব করে আগে থেকে ঠিক করে রেখেছে এতো সিট দেবে।’

সুপ্রিমকোর্টের আইনবীজী বদরুদ্দোজা বাদলের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য জমিরউদ্দিন সরকার, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচিত সভাপতি জয়নুল আবেদীন ও সম্পাদক মাহবুবউদ্দিন খোকন বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে দলের ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য এজে মোহাম্মদ আলী, আইন বিষয়ক সম্পাদক সানাউল্লাহ মিয়া, ঢাকা বারের মাসুদ আহমেদ তালুকদার, খোরশেদ আলম, মহসিন মিয়া, বোরহান উদ্দিন প্রমুখউপস্থিত ছিলেন।

সিটিজিসান.কম/রবি

Print This Post Print This Post