মায়ের কোল ফিরে পেল সেই শিশুটি

আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৮ ১০:২৩ অপরাহ্ন

সিটিজিসান, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম মহানগরের পাঁচলাইশ থানাধীন বেসরকারি চাইল্ড কেয়ার হাসপাতাল থেকে মৃত ছেলের বদলে পুলিশি হস্তক্ষেপে উদ্ধার করা কন্যাশিশুটিকে কোলে নিয়েছেন মা রোকসানা আকতার।

নিবার (২১ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬ টায় বেসরকারি রয়েল হাসপাতালের এনআইসিইউ থেকে কোলে করে শিশুটিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল নিয়ে আসেন এ মা। চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে শিশুটিকে পাঠানো হয় ৩২ নম্বর এনআইসিইউ ওয়ার্ডে।

রোকসানা আকতার বলেন, ‘আমি দুটি জিনিস চাই। প্রথমটি হচ্ছে আমার প্রথম বাবুটা যেন বেঁচে থাকেন তার জন্য দোয়া। দ্বিতীয়টি হচ্ছে, আমার সঙ্গে যে ঘটনা ঘটেছে তা যেন আর কোনো মায়ের সঙ্গে না ঘটে।’

বেসরকারি হাসপাতালের এনআইসিইউতে আরও সপ্তাহখানেক রাখার আর্থিক সামর্থ্য পরিবারটির নেই জানতে পেরে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের বিশেষ প্রতিনিধি আমিনুল হক বাবুর প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী শিশুটিকে চমেকে স্থানান্তরের ব্যবস্থা করেন।

সিভিল সার্জন বলেন, সপ্তাহখানেক ধরে দুই-তিনটি ক্লিনিকে শিশুটির চিকিৎসা করিয়েছে পরিবারটি। মাঝখানে মৃত শিশুটি ফেনীর গ্রামের বাড়ি নিয়ে যাওয়া, ফেরত আনা, পুলিশের হস্তক্ষেপ সব মিলে অনেক মানসিক, আর্থিক ঝড় গেছে তাদের ওপর। আমি বৃহস্পতিবার (১৯ এপ্রিল) শিশুটিকে মানবিক কারণে রয়েল হাসপাতালে দেখতে যাই। তখন চমেকে আনার বিষয়টি আলোচনা করি। কিন্তু শিশুটি নাড়াচাড়ার ধকল সইতে পারবে না চিকিৎসকরা এমন মত দেওয়ায় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগের গঠিত তদন্ত কমিটি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার কথা থাকলেও সাপ্তাহিক ছুটির দিন থাকায় জমা দিতে পারেনি। আশাকরি, রোববার (২২ এপ্রিল) প্রতিবেদনটি জমা দেবে।

মঙ্গলবার (১৭ এপ্রিল) নগরের প্রবর্তক মোড়ের বেসরকারি ‘চাইল্ড কেয়ার’ হাসপাতালে নবজাতক বদলে অপর এক শিশুর মরদেহ দেওয়ার এ ঘটনা ঘটে। গ্রামের বাড়িতে জানাজার আগে গোসল দেওয়ার সময় দেখা যায় সেটি ছেলের মরদেহ।

এরপর ওই মরদেহ সোজা পাঁচলাইশ থানায় এনে জিডি এবং পুলিশ ডিএনএ টেস্ট করার উদ্যোগ নিলে চাইল্ড কেয়ার কর্তৃপক্ষ ভোররাতে জানায় বেড বদলের কারণে শিশুটি বদল হয়েছে। কন্যা শিশুটি পাওয়া গেছে। পরদিন সাড়ে ১০টায় শিশুটি হস্তান্তর করা হলে বেসরকারি রয়েল হাসপাতালের এনআইসিইউতে ভর্তি করা হয়। প্রায় ৩৩ হাজার টাকার বিল আসার পর তাকে চমেক হাসপাতালে নেওয়া হলো। বর্তমানে শিশুটির শারীরিক অবস্থারও কিছুটা উন্নতি হয়েছে।

Print This Post Print This Post