চট্টগ্রামে আটক নারী মিয়ানমারের সোর্স!

আপডেট: ৩ জানুয়ারী ২০১৮ ১২:৩৭ অপরাহ্ন

image-63582

চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম মহানগর আদালত ভবন থেকে ফরিদা ইয়াসমিন সুমি (৩৫) নামে মিয়ানমারের এক নারী সোর্সকে আটক করেছে পুলিশ। ডিবির সোর্স পরিচয়ে ওই নারী দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামে গুপ্তচরের কাজে লিপ্ত ছিলেন বলে পুলিশ জানায়।

গতকাল মঙ্গলবার বিকালে নগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সোর্স পরিচয়ে প্রতারণার সন্দেহে সাদা পোশাক পরা ওই নারীকে পুলিশের হাতে তুলে দেন চট্টগ্রাম আদালতের আইনজীবীরা। তবে রাতে জিজ্ঞাসাবাদেই বেরিয়ে আসে আসল তথ্য।

মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. কামরুজ্জামান বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে ওই নারী প্রতারণার কথা স্বীকার করলেও অনেক সত্য লুকিয়ে যাচ্ছেন। তার সাথে কথা বলার পর মনে হয়েছে তিনি এদেশের নাগরিক নন। তিনি মিয়ানমারের নাগরিক। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষাও তিনি রপ্ত করেছেন। তার চলাফেরা, জীবনযাত্রা, আচার-আচরণ রহস্যজনক।

পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ধারণা করা হচ্ছে প্রতারক সুমি মিয়ানমারের গুপ্তচর। ডিবির সোর্স হিসেবে ভিজিটিং কার্ড বানিয়ে দাপটের সাথে নগরীতে ঘোরাফেরা করে তিনি গুপ্তচরের কাজে লিপ্ত রয়েছেন। তার নাম-পরিচয়ও আসল নয়। নাম পরিচয় পাল্টিয়ে তিনি অবস্থান করছেন।

মহানগরীর এমন কোনো থানা নেই যেখানে সুমি যাননি। ভুয়া কার্ড ব্যবহার করে আদালতে সাধারণ বিচারপ্রার্থীদের বিভ্রান্ত করেও সুমি টাকা পয়সা হাতিয়ে নিতেন। মঙ্গলবার বিকালেও প্রতারণার সময় আইনজীবীরা তাকে আটক করে কোতোয়ালী থানায় সোপর্দ করেন। তার ব্যাপারে গভীরভাবে তদন্ত হওয়া দরকার বলে মনে করেন পুলিশের এই কর্তা ব্যক্তি।

কোতয়ালী থানার ডিউটি অফিসার এএসআই খালেদা নাসরিন জানান, আদালতের হাজতখানার সামনে হাজতিদের স্বজনদের ভয়ভীতি ও সুযোগ-সুবিধা দেয়ার কথা বলে টাকা হাতানোর সময় এক আইনজীবীর সাথে সুমির বাক-বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তিনি নিজেকে ডিবির সোর্স পরিচয় দেন, যা চ্যালেঞ্জ করে সুমিকে পুলিশের হাতে তুলে দেন আইনজীবীরা।

খালেদা নাসরিন জানান, সুমির কাছ থেকে উদ্ধার করা ভিজিটিং কার্ডে তিনি নিজেকে লালখান বাজার পুলিশ ও ডিবি সোর্স হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তার বাবা মরহুম আমির হোসেন সওদাগর এবং মা আছমা বেগমের নামও ভিজিটিং কার্ডে লেখা আছে। তবে এ ধরনের কোনো ডিবির সোর্স ও মা-বাবার সন্ধান পাওয়া যায়নি। এ নারী জন্মসূত্রে বাংলাদেশি না ভিনদেশি তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তাকে আজ আদালতে নিয়ে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চাওয়া হবে।

নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (পশ্চিম) এ এ এম হুমায়ুন কবির বলেন, ডিবির সোর্স এই পরিচয়ে ভিজিটিং কার্ড বানানোর কোনো সুযোগ নেই। ডিবির নাম ভাঙিয়ে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে অন্যায় কাজে জড়িতদের কোনো ছাড় দেয়া হবে না। শিগগির আমরা এ ব্যাপারে অভিযানে নামব।

Print This Post Print This Post