পিএইচপির ২ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্নসাতের অভিযোগ!

আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৭ ৫:০৪ অপরাহ্ন

ফুলের তোড়া হাতে সৈয়দ মো. রাশেদুল আলম
ছবির শেষ বাম পাশে রাশেদুল আলম

চট্টগ্রাম :: ১২ লাখ ৬০ হাজার টাকা আত্নসাতের অভিযোগে চট্টগ্রামের শিল্পগ্রুপ পিইচপি ফ্যামিলীর দুই কর্মকর্তাকে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছেন জেলা জজ আদালতের এডভোকেট আকিব চৌধুরী। পাওনাদার আনোয়ার শাহাদাত ওরফে সুমনের পক্ষে এই নোটিশ পাঠান তিনি।

নোটিশ প্রাপ্তির ১০ দিনের মধ্যে অর্থ আত্নসাতকৃত টাকা ফেরত দিতে বলা হয়েছে। আত্নসাতকৃত টাকা ওই সময়ের মধ্য ফেরত দিতে ব্যর্থ হলে তাদের বিরুদ্ধে এ ব্যাপারে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা কেন নেওয়া হবে।

অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হচ্ছেন- পিএইচপি ফ্যামিলীর সিনিয়র সহকারী ব্যবস্থাপক (অর্থ) সৈয়দ মো. রাশেদুল আলম, সিনিয়র ডেপুটি জেনারেল ম্যনেজার (অপারেশন) এ কে এম বাহার আহমেদ চৌধুরী।

এডভোকেট আকিব চৌধুরী জানান, গত ১৩ এপ্রিল অভিযুক্তদের বরাবরে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। ২৩ এপ্রিল মধ্য দুই কর্মকর্তা আত্নসাতকৃত টাকা ফেরত না দিলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এডভোকেট আকিব চৌধুরী অভিযুক্তদের উদ্দেশ্যে নোটিশে বলেন, আনোয়ার শাহাদাত ওরফে সুমন একজন ব্যবসায়ী। গত ৩০ নভেম্বর ২০১৬ ইং তারিখে ব্যবসার নিমিত্তে এমটিটি (মিনারেল তারফিন তেল) নামক ব্যসায়ীক পণ্য ক্রয়ের জন্য একসাথে ১২ লাখ ৬০ হাজার টাকা প্রদান করেন। যা পিএইচপি ফ্যামিলীর সিনিয়র সহকারী ব্যবস্থাপক (অর্থ) সৈয়দ মো. রাশেদুল আলম প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত ক্যাশ মেমোতে জমা না দেখিয়ে সৈয়দ মো. রাশেদুল আলমের ভিজিটিং কার্ড ও স্বাক্ষরিত প্যাডে টাকা রিসিভ করে নেয়।

কিন্তু আনোয়ার শাহাদাত ওরফে সুমন ব্যবসায়ী পণ্য (এমটিটি) সরবরাহ পাননি। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করলে রাশেদুল আলম ও বাহার আহমেদ চৌধুরী নানা টালবাহানা শুরু করেন। এইভাবে কালক্ষেপনের পর বাধ্য হয়ে আইনি সহায়তা নেন সুমন। ফলে প্রাথমিক পদক্ষেপে এ টাকা আত্নসাতের অভিযোগ এনে লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করা হয়। লিগ্যাল নোটিশের কপি পিএইচপি ফ্যামিলীর চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডাইরেক্টরের অবগতির জন্যও প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান এডভোকেট আকিব চৌধুরী।

এ ব্যাপারে যোগযোগ করা হলে পিএইচপি ফ্যামিলীর সিনিয়র সহকারী ব্যবস্থাপক (অর্থ) সৈয়দ মো. রাশেদুল আলম নোটিশ প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে বলেন, আমি অর্থ আত্নসাৎ করিনি। আনোয়ার শাহাদাত ওরফে সুমনের সাথে এ ব্যবসার কোন সম্পর্কও নেই। এ ব্যবসার সাথে জড়িত সুরুজ মিয়া নামে এক ব্যক্তি। যাকে তাদের ডিও মোতাবেক বন্ধন ট্রেডার্সের নামে প্রথম দফায় ৬ লাখ ৩০ হাজার টাকার পণ্য (এমটিটি) ডেলিভারী করা হয়েছে। পরবর্তিতে তাদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হলে দ্বিতীয় দফায় পণ্য ডেলিভারি না দিয়ে বন্ধন ট্রের্ডাসের নামে চেকের মাধ্যমে ৬ লাখ ৩০ হাজার টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে।

প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সুরুজ মিয়া, কামাল উদ্দিন ও আনোয়ার শাহাদাত ওরফে সুমন তারা ব্যবসায়ীক পার্টনার। বন্ধন ট্রেডার্সের মালিক সুরুজ হলেও টাকা জমাদানের সময় তারা তিনজনই ছিলেন। তবে আমার সাথে কথা হয়েছে সুরুজ মিয়ার সাথে।

এ ব্যাপারে আনোয়ার শাহাদাত সুমন জানান, ১২ লাখ ৬০ হাজার টাকা সম্পূর্ণ আমার। আমার কাছ থেকে সৈয়দ মো. রাশেদুল আলম টাকা গ্রহণ করে আমাতে তার ভিজিটিং কার্ডসহ সাদা কাগজে সই করে উক্ত টাকাটা রিসিভ করেন। কিন্তু সুরুজ মিয়ার বন্ধন ট্রের্ডার্সের নামে পণ্য ডেলিভারী কেন হবে তা আমার বোধগম্য নয়।

আনোয়ার শাহাদাত ও কামাল উদ্দিনের বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে সৈয়দ মো. রাশেদুল আলম বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, সমস্যা নেই, এ ব্যাপারে আমরাও আইনজীবি নিয়োগ দেব।

জানা গেছে, পিএইচপি ফ্যামীলীর সিনিয়র সহকারী ব্যবস্থাপক (অর্থ) সৈয়দ মো. রাশেদুল আলম প্রতিষ্ঠানে নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির সাথে জড়িত। নগরীর নন্দন কানন এরাকায় বিলাসবহুল অভিজাত একটি শপিং সেন্টার রয়েছে। রয়েছে জুবলী রোডে ইটিক ইত্তেহাদ পয়েন্টে মক্কা টাইলস এন্ড সেনেটারির বিশাল দোকান। যেখানে কয়েক কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে। এছাড়া নগরীতে কয়েকশ কোটি টাকার বিলাসবহুল ভবন রয়েছে তার। যা এ পদে চাকরি করে কোনমতেই অর্জন সম্ভব নয় বলে দাবি করেন পিএইচপি ফ্যামিলীর অনেকেই।

এর আগে, এই ধরনের ব্যবসার কথা বলে সৈয়দ মো. রাশেদুল আলম নগরীর চকবাজার এলাকার আলহাজ্ব এসএম ইউছুপের কাছ থেকে ব্যবসার কথা বলে চেকের মাধ্যমে ৫৫ লাখ টাকা গ্রহণ করে। পরবর্তিতে উক্ত টাকা নিয়ে ফেরত দিতে টালবাহানা করলে গত ১৭ নভেম্বর ২০১৬ ইং তারিখে চীফ মেট্রােপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে টাকা আত্নসাদের মামলা দায়ের করেন।

সিটিজিসান.কম/রবি

 

Print This Post Print This Post